আবদুল ওদুদ রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলিকে ঢেলে সাজাতে একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বাজেটে এই দফতরকে ঢেলে সাজানোর জন্য গত বাজেটের থেকে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। গত বাজেটে ছিল ২৩৯৮৩.২৭ কোটি। এবারের বাজেটে ২৫১৮১.৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত বছরে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ৬০৪.৩০ কোটি টাকা খরচ করে ৪৬২৫.৫২ কিমি রাস্তা তৈরি এবং মেরামতির কাজ করা হয়েছে। চলতি বাজেটের তথ্য অনুযায়ী বাংলা গ্রামীন সড়ক যোজনা-২ অধীনে অর্থ বরাদ্দের কাজ শেষ করা হয়েছে এবং বাংলা সড়ক যোজনা-১ নির্মান কাজের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে। এর ফলে রাজ্য এূন বাংলা সড়ক যোজনা-৩ কাজের জন্য বিবেচিত হয়েছে। যা শুধু রাজ্য নয় দেশেও নজির তৈরি করেছে।
মিশন নির্মল বাংলা কর্মসূচির অধীনে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৬– ৩৪–৯৬৭টি গৃহ শৌচালয় তৈরি করা হয়েছ। ফলে বাংলার সব গ্রাম পঞ্চায়েত এূন ‘উন্মক্ত শৌচমুক্ত’ বলে ঘোষিত হয়েছে। এছাড়া ৬২৫২টি সর্ব সাধারনের জন্য শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। ৩৩১ টি পঞ্চায়েতে কঠিন ও তরল বর্জ্য নিস্কাসন কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থ বর্ষে ৪৮৯৬৭৭ টি পরিবার পিছু গৃহ শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। বাংলা আবাষ যোজনার অধীনে এূন পর্যন্ত ৩৪–৫৭–১৬৩টি বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। ২০১৬ থেকে ১৭ সালে এই যোজনা শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে সব থেকে বেশি বাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র তৈরি হয়েছে ১৩৩২টি। ২০২১ ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ২৭৭৮৯টি জলাধার সহ জল সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। জয় বাংলা প্রকল্পের কাজে পিছিয়ে নেই রাজ্য পঞ্চায়ের দফতর। দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষজেনর জন্য যে পেনশন প্রকল্প ‘জয় বাংলা’ তৈরি হয়েছে তাতে প্রতিমাসে ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। ২০২১ ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২৩–১৬–০৫৮ জন সুবিধাভোগীকে পেনশন দেওয়া হয়েছে। ‘ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামীন জীবিকা মিশন’ এই কর্মসূচীর অধীনে ৯৫.৮ লক্ষ গ্রামীন মহিলাকে ৯–১০–৫৩৪ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে স্বনিযুক্তির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৩–৩৩–৫০১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১–৫৪৫.৬১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এনআরএলএম কর্মসূচীর মাধ্যমে ১২৩৫৭ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই কর্মসূচীতে এ রাজ্যই দেশের মধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উন্নয়নে চতুর্থ সেরা রাজ্যের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এছাড়াও আনন্দ ধারা নামে একটি কর্মসূচি তৈরির মাধ্যমে রাজ্যের ৩২৪৪৪ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে ৬৩ লক্ষ ৯৪ হাজার বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর স্কুল ইউনিফর্ম তৈরির করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বছরে আনুমানিক ১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর শ্রমজীবি মানুষদের জন্য পিছিয়ে নেই । গত ডিসেম্বর মাস পর্টন্ত ৩০.১৩ কোটি শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছে। এই সময়ের মধ্যে ৭২ লক্ষ পরিবারের ১০২.৭৪ লক্ষ শ্রমজীবি মানুষকে কাজ দেওয়া সুনিশ্চিত করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। এই বছরই প্রায় ৮.৯৬ লক্ষ নতুন জব কার্ড দেওয়া হয়েছে।