পুবের কলম প্রতিবেদক: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে ১২ বছর বয়সি পর্যন্ত সন্তান রয়েছে এমন মায়েদের টিকাকরণে বিশেষ জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। বুধবার নবান্নে ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়– ‘তৃতীয় ঢেউ নিয়ে অনেকেই সতর্ক করেছেন। ১২ বছর বয়সি শিশুরা মায়েদের সঙ্গে থাকে। মায়েরাই তাদের দেখভাল করে। যাতে মায়েদের থেকে শিশুদের করোনা না ছড়ায়– তাই এবার মায়েদের গুরুত্ব দিয়ে টিকাকরণ করা হবে। ছোট্ট বাচ্চা থেকে ১২ বছর বয়সিদের মায়েদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’।
রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধের ফলে করোনার সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন– ‘পঞ্চম থেকে অষ্টম দফার সময় পজিটিভিটি রেট ছিল ৩৩ শতাংশ। বিশেষ করে অষ্টম দফায় এটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। তবে কোথাও কোথাও বর্তমানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০০-র নিচে নেমেছে। পজিটিভিটি রেট কমিয়ে আনা হয়েছে ৩.৬১ শতাংশে। সংক্রমণে লাগাম পরাতে ২৫০-র বেশি কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে।’
রাজ্যে করোনার টিকাকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন– ‘এখনও পর্যন্ত আমরা ২ কোটি ডোজ দিয়েছি। তার মধ্যে সুপার স্প্রেডারদের ৩৩ লক্ষ টিকা দিয়েছি। প্রতিদিন গড়ে ৩ লক্ষ করে ডোজ দিই। জুলাই মাসের মধ্যে আরও ৭০ লক্ষ টিকা দেব। আগামীকাল থেকে চার লক্ষ ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে নিয়েছেন। তা না হলে এতদিনে রাজ্যের তিন কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়ে যেত’।
মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান– ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য একটা কমিটি তৈরি করা হয়েছে। পেডিয়াট্রিক কেয়ার এর জন্য জুলাই মাসের মধ্যেই আলাদা পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। জুলাইয়ের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৩০০টি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ তৈরি হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ৩৫০টি এসএনসিইউ তৈরির পাশাপাশি ১০ হাজার শয্যা বাড়ানো হবে। অক্সিজেন এর চাহিদা অনেকটা বেড়েছে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়। সেই বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে।’