উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : শীত আর মোয়া একে আরেকের পরিপূরক। আর শীত পড়তেই শুরু হয়ে গেছে জয়নগরের মোয়ার চাহিদা। এমনিতেই জয়নগরের মোয়ার জগৎজোড়া নাম। তারপর জিআই ট্যাগ প্রাপ্তির পর এই মিষ্টি আর ও নামজাদা হয়ে উঠেছে।
গত বছর জয়নগর থেকে সমুদ্র পেরিয়ে মোয়া পাড়ি দিয়ে ছিল সুইডেন, মালয়েশিয়া। আর এবার গেল আমেরিকাতে।শীত জমাট বাঁধতেই কনকচূড় ধানের মিষ্টি গন্ধ ধরেছে। নলেন গুড়ের স্বাদ বেড়ে প্রায় দেবভোগ্য। সে সব সহযোগে তৈরি হচ্ছে উৎকৃষ্ট জাতের মোয়া।কনকচূড় ধানের খই আর নলেন গুড়ের মিশ্রণ ও তাতে পড়ে খোয়া ক্ষীর, ঘি তবেই জয়নগরের মোয়া হয় অতুলনীয়।
এখন বিদেশ থেকে অর্ডার আসা শুরু হয়ে গিয়েছে।বড়দিনেরআগে আর ও বরাত দেবে রফতানি সংস্থা গুলি বলে জানালেন জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীরা।বহড়ুর মোয়া ব্যবসায়ী গনেশ দাস বলেন, খেজুর গাছ থেকে ভাল পরিমাণ রস সংগ্রহ হচ্ছে। গুড়ের জোগান পর্যাপ্ত। শীত ভাল ভাবে না পড়লে এসব মিলত না। ফলে গত বছরের তুলনায় এবছর চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে বিদেশে রফতানি আরওবাড়বে।জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ী খোকন দাস বলেন, ‘গতবছর ১৫ হাজার পিস মোয়া বিদেশে রফতানি হয়েছে।
এবছর এই সময়ের মধ্যে তার থেকে বেশি রফতানি হবে। বড়দিনের আগে বিক্রি আরও বাড়বে।’মোয়া ব্যবসায়ী রাজেশ দাস জানান, এক রফতানি সংস্থার মাধ্যমে আমেরিকাতে মোয়া পাঠানো হয়েছে প্রায় ৫০ কেজি। যা সময় নিয়ে যেতে লাগবে পাঁচ দিন।পাঁচ দিনের মধ্যে তা পৌঁছে যাবে আমেরিকার মাটিতে জয়নগরের মোয়া। ঘি, ক্ষীর কিসমিস, এলাচ, জয়িত্রি, নলেন গুড়, কনকচূড় ধান দিয়ে সে মোয়া তৈরি হয়েছে। গত বছর চেন্নাই বেঙ্গালুরুর এমন কি মালয়েশিয়াতে ও পাঠানো হয়ে ছিল।
তবে জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ী তিলক কয়াল বলেন, মোয়া হাব যত তাড়াতাড়ি চালু হবে তাতে প্যাকেজিং মেশিন থাকলে রফতানির পরিমাণ আর ও বাড়বে।জয়নগরের এলাকা জুড়ে একের পর এক মোয়ার দোকান। এখন গোটা এলাকা দিন ভর মোয়ার গন্ধে মম করছে।
অথচ কিছুদিন আগেও বাজার কেমন যাবে তা নিয়ে প্রবল ধন্ধে ছিলেন প্রস্তুত কারকরা। সপ্তাহ খানেক আগে কনকনিয়ে শীত পড়তেই খেজুর রসের জোগান বেড়েছে।কনকচূড় ধান সুগন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। ফলে মুখে হাসি ফুটেছে বহড়ু জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের।