বিশেষ প্রতিবেদক: অসমের হোটেল, রেস্তোরাঁ, সামাজিক অনুষ্ঠানে গোমাংস নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর পাশের রাজ্য মেঘালয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মেঘালয়ের খোদ বিজেপি বিধায়ক সনবর শুল্লাই অসম সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি অসম সরকারের এই সিদ্ধান্তকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন। বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে তিনি এ বিষয়ে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন। বিজেপি বিধায়ক শুল্লাই সরাসরি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে গোমাংস নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, অসমে গোমাংস নিষিদ্ধ করায মেঘালয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। মেঘালয়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপজাতি মানুষের খাদ্যাভ্যাস গোমাংস। এই মাংসের ৬০ শতাংশ বাইরের রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। এখন অসমে গোমাংস নিষিদ্ধ হওয়ায় মেঘালয়ের অর্থনীতি ও মানুষের খাবারে প্রভাব পড়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার পাশাপাশি মেঘালয়ে গোমাংস আমদানিতে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে অসম সরকারকে প্রয়েজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এই চিঠির প্রতিক্রিয়া এখনও হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
Read More: ভারতের সংবিধান সংঘের বিধান নয়: সংসদে ঝড় তুললেন প্রিয়াঙ্কা
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর অসমের সামাজিক অনুষ্ঠান, হোটেল, রেস্তোরাঁয় গোমাংস নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মন্ত্রিসভা। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একটি খাদ্যাভ্যাসকে অপরাধের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অসম সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিভিন্ন দল ও সংগঠন। বিজেপি দল থেকেও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। গোয়া বিজেপি অসম সরকারের সমালোচনায় সরব হয়। মেঘালয়ের বিজেপি বিধায়ক সনবর শুল্লাই সাংবাদিক বৈঠক করে অসম সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এ দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র রয়েছে। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মাংস খেয়ে থাকে। খাওয়ার অভ্যাস ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। তাতে আমাদের সংবিধানও হস্তক্ষেপ করেনি।
মেঘালয়ের বিজেপি শরিক এনপিপিও অসম সরকারের গোমাংস নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী মারকুইস মারাক এক অনুষ্ঠানে বলেন, অসম সরকার অনৈতিকভাবে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ করছে। অসম গোমাংস নিষিদ্ধ করায় মেঘালয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অসম সরকারকে শীঘ্রই এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।