১২ জুলাই ২০২৫, শনিবার, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্র

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার
  • / 56

নয়াদিল্লি: বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে সরব। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। বিরোধীরা যখন দাবি জানাচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার কি করছে তা প্রকাশ করতে হবে সেই পরিস্থিতিতে এদিন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলল কেন্দ্র। এদিন রাজ্যসভায় কেন্দ্রের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী  কীর্তিবর্ধন সিং জানান, তাঁরা (কেন্দ্র) বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেদেশে সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব ঢাকার অন্তর্র্বর্তী সরকারের।

Read More: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে কি বিচারপতি চন্দ্রচূড়!

সম্প্রতি একদিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিস্রি। সেখানে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সেদেশের বিদেশমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তিনি ঢাকাকে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়ে আসেন। তারপরই এদিন রাজ্যসভায় বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের কথা তুলে ধরলেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং। বৃহস্পতিবার সংসদে কীর্তিবর্ধন বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সে দেশের সরকার সংখ্যালঘুদের সাথে জড়িত সহিংসতার ঘটনায় ৭০জনকে গ্রেফতার করেছে এবং এ পর্যন্ত ৮৮টি মামলা দায়ের করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগগুলি বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের নজরে আনা হয়েছে এবং বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি ভারতের তরফে উত্থাপনও করা হয়েছে। তিনি জানান, ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনও সেদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

তিনি বলেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর কি ধরনের নির্যাতন হয়েছে সে সম্পর্কে বিদেশ প্রতিমন্ত্রর ব্যাখ্যা, প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবারের দুর্গাপূজার সময় মন্দির ও পূজা মণ্ডপে হামলার খবরও প্রকাশিত হয়েছিল। ভারত সরকারের তরফে ঢাকার তাঁতীবাজারে একটি পূজা মণ্ডপে হামলা এবং দুর্গাপূজার সময় সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে চুরির বিষয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করা হয়েছে। এই হামলার পর বাংলাদেশ সরকারও ব্যবস্থা নেয় বলে তিনি জানান। বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন সুনিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড মোতায়েন সহ বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশনা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকার সেখানকার হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ৯ ডিসেম্বর ভারতের বিদেশ সচিবের বাংলাদেশ সফরের সময়ও সংখ্যালঘু নিগ্রহ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

 

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে কেন্দ্র

আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

নয়াদিল্লি: বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে সরব। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। বিরোধীরা যখন দাবি জানাচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকার কি করছে তা প্রকাশ করতে হবে সেই পরিস্থিতিতে এদিন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলল কেন্দ্র। এদিন রাজ্যসভায় কেন্দ্রের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী  কীর্তিবর্ধন সিং জানান, তাঁরা (কেন্দ্র) বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। একইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেদেশে সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব ঢাকার অন্তর্র্বর্তী সরকারের।

Read More: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান পদে কি বিচারপতি চন্দ্রচূড়!

সম্প্রতি একদিনের বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিস্রি। সেখানে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি সেদেশের বিদেশমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তিনি ঢাকাকে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি জানিয়ে আসেন। তারপরই এদিন রাজ্যসভায় বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের কথা তুলে ধরলেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং। বৃহস্পতিবার সংসদে কীর্তিবর্ধন বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সম্পর্কিত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সে দেশের সরকার সংখ্যালঘুদের সাথে জড়িত সহিংসতার ঘটনায় ৭০জনকে গ্রেফতার করেছে এবং এ পর্যন্ত ৮৮টি মামলা দায়ের করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগগুলি বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের নজরে আনা হয়েছে এবং বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি ভারতের তরফে উত্থাপনও করা হয়েছে। তিনি জানান, ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনও সেদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

তিনি বলেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর কি ধরনের নির্যাতন হয়েছে সে সম্পর্কে বিদেশ প্রতিমন্ত্রর ব্যাখ্যা, প্রতিবেশী দেশে হিন্দুদের বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এবারের দুর্গাপূজার সময় মন্দির ও পূজা মণ্ডপে হামলার খবরও প্রকাশিত হয়েছিল। ভারত সরকারের তরফে ঢাকার তাঁতীবাজারে একটি পূজা মণ্ডপে হামলা এবং দুর্গাপূজার সময় সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে চুরির বিষয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করা হয়েছে। এই হামলার পর বাংলাদেশ সরকারও ব্যবস্থা নেয় বলে তিনি জানান। বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর কথায়, ‘দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন সুনিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড মোতায়েন সহ বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশনা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সরকার সেখানকার হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ৯ ডিসেম্বর ভারতের বিদেশ সচিবের বাংলাদেশ সফরের সময়ও সংখ্যালঘু নিগ্রহ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।