পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : কলকাতা থেকে সুদূর মুম্বইয়ে পালিয়েও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়ল কাঁকুলিয়া জোড়া খুন কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ভিকি হালদার। সোমবার মুম্বইয়ে গ্রেফতার করা হয় ভিকির সঙ্গী শুভঙ্কর মণ্ডলকেও। এই ঘটনার আর এক অভিযুক্ত ভিকির মা মিঠু এবং আরও তিন জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করে জাহির গাজি এবং বাপি মণ্ডল নামে আরও দু’জনের খোঁজ মেলে। তার পরই এই দু’জনের খোঁজে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় হানা দেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দল। সেখানে ভিকিকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে মুম্বই থেকে পাওয়া গেল ভিকিকে।
গত ৩০ অক্টোবর মুম্বইয়ের কালাচৌকি এলাকা থেকে এই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কালাচৌকি থানা এলাকার কল্পতরু আভানা নামে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পার্কিং লটে গা ঢাকা দিয়েছিল ভিকি এবং তার সঙ্গী শুভঙ্কর।
১৭ অক্টোবর গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়ায় কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকী ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুন করা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে ২০ অক্টোবর ডায়মন্ড হারবার থেকে সুবীর বাবুর পরিচারিকা মিঠু হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় মিঠু গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করেন বলে দাবি পুলিশের। বাড়ি কেনা নিয়ে ক্রেতা সেজে সুবীর চাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করে মিঠুর ছেলে ভিকি। ঘটনার দিন ভিকিকে চিনে ফেলে সুবীর। তারপরই খুন হতে হয় তাঁকে।
রাতভর তল্লাশি চালিয়ে জাহিরকে নিকটবর্তী একটি দ্বীপ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত রবিবার খুনের পরে দু’দিন বাড়িতে থাকলেও মঙ্গলবার থেকে পাথরপ্রতিমায় তাঁদের আত্মীয়ের বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন জাহির এবং বাপি।
বৃহস্পতিবার রাতে জি-প্লটে বুড়াবুড়ির তট থেকে প্রথমে বাপিকে আটক করে পুলিশ। এর পর গাজির খোঁজে ওই রাতেই তল্লাশি অভিযানে গেলে কুকুরের চিৎকারে টের পেয়ে যান তিনি। ফলে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়ে নিকটবর্তী একটি দ্বীপে আশ্রয় নেন জাহির। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ওই দ্বীপ থেকে জাহিরকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে আসেন গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, গড়িয়াহাটের কর্পোরেট-কর্তা সুবীর চাকীকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এই দু’জন।
জাহির এবং বাপি খুনের দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করলেও তাঁরা খুনের দায় পুরোপুরি চাপিয়েছেন ভিকির উপরই। জেরায় তাঁরা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ‘কাজ’ আছে বলে তাঁদের ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাঁদের এই দাবি এখনই মানতে রাজি নয়। বাপির স্ত্রী বন্দনার দাবি, “ঘটনার পরে বাড়ি ফিরেছিল বাপি। ওর হাত-পা কাঁপছিল। বার বার বলছিল আমাকে বাঁচাও। আমি খুন করিনি। ভিকিই গলায় ছুরি চালিয়েছে।”