‘
পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ রঙ আমাদের মনকে ভালো করে। বিষাদ বা অবসাদ কে দূর করতেও রঙের জুড়ি মেলা ভার। আচ্ছা ভাবুন তো যদি যান রামধনু গ্রামে। একটা আস্ত গ্রাম রঙে রঙে রঙিন।
যার সৌন্দর্য দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। এমনো সুন্দর কোনো গ্রাম হয় কি না, ভেবে অবাক হবেন!ফরাসি শিল্পী হেনরি এমাইল বেনোইট ম্যাটিস একবার বলেছিলেন, ‘রঙের প্রধান কাজটিই হলো অভিব্যক্তি প্রদর্শন করা’ রং দেখলে সবার মনই আনন্দে ভরে ওঠে।
ঠিক একইভাবে তাইওয়ানের তাইচুংয়ের নানতুন জেলার ‘রেইনবো ভিলেজ’ দেখলে আপনি রীতিমতো খুশি হয়ে উঠবেন।এটিই হয়তো বিশ্বের একমাত্র গ্রাম, যেখানকার ঘর-বাড়ি, দেওয়াল, রাস্তা সবই শিল্পীর তুলিতে আঁকা হরেক রং দিয়ে। এই গ্রামে ঢুকলেই মনে হবে অজানা পৃথিবীতে পা রেখেছেন।
হুয়াং ইউং ফু নামক একজন প্রাক্তন সৈনিক তার সাজানো গোছানো বাড়িটি ডেভেলপারদের কাছে হারাতে বসেছিলেন। ওই গ্রামের প্রায় সবাই ডেভেলপারদের কাছে নিজেদের ঘরগুলো বিক্রি করে সেখান থেকে চলে যান। গ্রামটি জনশূন্য হয়ে পড়ে।হুয়াং ইউং ফুর বাড়ির পাশের ১১টি বাড়ি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এ সময় মনের অজান্তেই ভালো লাগা থেকে তিনি নিজ বাড়ির আসবাবপত্রে ছবি আঁকা শুরু করেন।
তারপরে শিল্পকর্মটি এক দেওয়াল থেকে অন্য দেওয়ালে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর প্রতিবেশীদের পরিত্যক্ত বাড়িতেও আঁকাআঁকি শুরু করেন তিনি।
একবার কাছের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তার শিল্পকর্ম দেখে ছবি তোলে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিগুলো শেয়ার করে। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। দেশ দেশান্তরে ছড়িয়ে পরে গ্রামের নাম। এরপর গ্রামের নাম দেওয়া হয় ‘রেনবো ভিলেজ’।
এখন হুয়াং ইউং ফু রেনবো দাদু নামেই পরিচিত সবার কাছে। তার বয়স এখন ১০০ এর কোঠায়। স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে তিনি এখন আর রেনবো গ্রামে বসবাস করছেন না। যদিও রেনবো ভিলেজটি এখন সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত।বর্তসানে এই গ্রাম তাইওয়ানের একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্পট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা গ্রামটি দর্শনে যান সেখানে। এছাড়া তাইওয়ানবাসীরাও সুযোগ পেলেই ঢুঁ মারেন গ্রামটিতে।
এই গ্রামের শিল্পকর্মগুলোর বেশিরভাগই পারিবারিক প্রেম, বন্ধুত্ব, সুখ ও প্রকৃতির দৃশ্য চিত্রিত করে। এসব দেখে পর্যটকরাও বেশ বিমোহিত হন। রেনবো ভিলেজ প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে।