আবদুল ওদুদ : মসজিদুল আক্সা বা বায়তুল মুকাদ্দাস সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্রস্থান বলে বিবেচিত। এই পবিত্র স্থানটির দাবিদার ইহুদিরাও। তারাও এটিকে তাদের অন্যতম পবিত্রস্থান হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। মসজিদুল আকসা নিয়ে বছরের পর বছর ইসরাইল ও ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব অব্যাহত। শুক্রবার ফজরের নামাযের সময় ফের ইসরাইলি সেনারা আক্রমন চালায় ফিলিস্তিনিদের উপর। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এরাজ্যের বিশিষ্টজনেরা। তাদের মতামত তুলে ধরেছেন, পুবের কলম-এর ডেপুটি চিফ রিপোর্টার আবদুল ওদুদ
আবদুর রফিক, আমীর, রাজ্য জামাআতে ইসলামি হিন্দ
ইসরাইলি পুলিশ আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে যে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছেন তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য জনক। প্রত্যেক রমযানে এই ধরনের হামলা চালাচ্ছে তারা । রাজ্য জামাআত এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানায়। সব থেকে বেশি দুর্ভাগ্যজনক বিষয় আন্তর্জাতিক সিভিল সোসাইটি এই ঘটনায় সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে না। ফিলিস্থিনি ভাইয়েরা নিজেদের জান মাল দিয়ে এই পবিত্র স্থানকে রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই জন্য সাধুবাদ জানায়। জায়েদাবাদী সরকার তাদের অস্ত্রের আস্ফালন, খালি হাতে মোকাবেলা করা সম্ভব নয় ফিলিস্তিনি ভাইদের। তাই বার বার মার খাচ্ছে ফিলিস্থিনি যুবকরা। আল্লাহ ওই পবিত্র মাসে মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাসের পবিত্রতা রক্ষা করবেন । আর সেখানে মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক।
মাওলানা শফিক কাসেমী, ইমাম, নাখোদা মসজিদ
মাওলানা ইসহাক মাদানী, ইসলামি চিন্তাবিদ
ফিলিস্তিনিদের নিজের বাড়ি, ঘর থেকে উচ্ছেদ করে বর্বরোচিত আক্রমন সেই সঙ্গে তাদের উপাসনা গৃহেও আক্রমন কর, পৃথিবীতে সব থেকে নিকৃষ্ট মানবিকতা এবং নিকৃষ্ট আক্রমন বলে মনে করি। অত্যন্ত আশ্চর্য্যযের বিষয় যারা মানবতার ঢাক পেটায়, কিন্তু ফিলিস্থিনিদের উপর ইসরাইলি সৈন্যরা হামলা চালায় তখন তারা বাকহীন হয়ে যায়। এতেই বোঝা যায়, যারা পৃথিবী মানবিকতার কথা বলে, প্রকৃত মানবতা তাদের হৃদয়ে থাকে না, কেবল মুখে বেরিয়ে আসে। আর শুক্রবার মসজিদুল আকসাতে হামলার ঘটনায় ফের স্পষ্ট হল। মুসলিম দেশগুলিতে আজ নির্বাক। ইসরাইলি আক্রমন নিয়েনীরব থাকা মুসলিম বিশ্বের দেশগুলির ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সাধারণ সম্পাদক, সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন
রমজান মাসের জুমার দিনে ফজরের নামাজের সময়ে ইসরায়েলি সেনা বাহিনী নামাজিদের উপরে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ও গুলিবর্ষণ করে তার বর্বরতার পরিচয় বহাল রাখল। রমজান মাসে যখন বিভিন্ন দেশ তাদের বৈদেশিক নীতিতে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখে, সেই সময়ে ইজরাইলের এই আক্রমণ একবিংশ শতাধীর সেরা লজ্জা। আমরা এই অমানবিক হামলার তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছি। একই সাথে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের কাছে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের তীব্র ধিক্কার জানানোর আবেদন জানাচ্ছি।
পীর ইমরান সিদ্দিকী, সভাপতি জমিয়তে উলামায়ে বাংলা
ইসরাইলি সেনা যেভাবে আল আকসা মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র ধিক্কার জানায়। আল-আকসা মসজিদ রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তৃব্য। কিন্তু একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জায়েনবাদী ইসরাইল কৌশলে প্রতিবছর রমযানে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা চালাচ্ছে। আর নিরীহ ফিলিস্তিনি যুবকদের ক্ষয়ক্ষতি করছে। ইসরাইলি সেনার আক্রমনে নিহত হচ্ছে বহু মানুষ। কিন্তু বিশ্বের মুসলিম দেশগুলি নীরব থাকছে। মুসলিম দেশগুলির রাষ্ট্র প্রধানদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পবিত্র রমযান মাসে এই ধরনের হামলার ঘটনা নিয়ে তীব্রধিক্কার জানান তিনি।
আহমদ হাসান ইমরান , সাবেক সাংসদ, সম্পাদক,পুবের কলম
১৯৪৮ সালে পাশ্চাত্যের খ্রীষ্টান দেশগুলি জবরদস্তি ফিলিস্তিনের জমিনে বাইরে থেকে ইহুদিদের নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করেছিল জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের। এরপর ১৯৬৭ সালে যুদ্ধে ইসরাইলিরা দখল করে পবিত্র শহর জেরুসালেম। এখানেই রয়েছে ইসলামের প্রথম কিবলা এবং তৃতীয় পবিত্র মসজিদ। ইসরাইল দাবি করে, এই এলাকা তাদের ধর্মীয়স্থান। আর তাই বার বার আল-কুদস-এ মসজিদুল আকসা-য় তারা বর্বর হামলা চালাচ্ছে। নাৎসী হিটলার থেকেও নৃশংস জায়নবাদীদের এই আক্রমণ ও উৎখাত প্রক্রিয়া। কিন্তু আখেরে তারা পরাজিত হবেই।