বিশেষ প্রতিবেদক : শরিয়তের নিয়ম মেনে মাথায় কাপড় থাকায় বেশ কিছু তরুণী পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষায় বসার জন্য এডমিট কার্ড পায় নি। ফলে মাথায় ওড়না বা হিজাবধারী বহুতরুণী কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় বসতেই পারেনি। এই খবরে বাংলার মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ হয়েছে। কারণ হিজাব বা ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকা থাকলেও এই তরুণীদের মুখ কিন্তু উন্মুক্ত ছিল। তাদের আইডেনন্টিফাই বা চিহ্নিত করতে কোনও অসুবিধাই হচ্ছিল না।
এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন পুলিশ নিয়োগ কমিশনে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। কিন্তু এতে কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। সোমবার কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষাটি যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বলাবাহুল্য মাথায় ওড়না পরিহিতা তরুণীরা পরীক্ষায় বসতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত বঞ্চিত কয়েকজন পরীক্ষার্থী আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। এরা কলকাতা হাইকোর্টে সুবিচার চেয়ে একটি পিটিশন দাখিল করেছেন। পিটিশন দাখিলকারী মহিলাদের মধ্যে রয়েছেন– সোনামনি খাতুন– কে.খাতুন– শারিকা পারভিন খাতুন– হাফিজা খাতুন– আসিয়া খাতুন। তারা পুবের কলম পত্রিকাকে বলেন– সরকার ইচ্ছে করলে সহজেই নিয়ম পরিবর্তন করতে পারে। এমন নিয়ম থাকার কী প্রয়োজন যে নিয়মে বৈষম্য করা হয়? শিখ পুরুষদের ক্ষেত্রে দাঁড়ি– লম্বা চুল এবং পাগড়ি পরিধানের জন্য ছুট দেওয়া হয়েছে। তেমনি ধর্মপ্রাণ মুসলিম মহিলাদেরও শরিয়াত লঙ্ঘনে বাধ্য করা উচিৎ নয়।
এই তরুণীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম পুবের কলমকে বলেন– ‘আমরা যে পিটিশনটি দাখিল করেছি তা ২৩ নম্বর কোর্টের বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় গ্রহণ করেছেন। শীঘ্রই মামলাটির শুনানি হবে। তিনি আরও বলেন– ‘সম্প্রতি নিট ও অন্য একটি পরীক্ষায় কেরল হাইকোর্ট রায় দিয়েছে পরীক্ষায় বসার জন্য যে ড্রেসকোড রয়েছে– প্রয়োজনে তাতে ব্যতিক্রম রাখতে হবে। নিজ নিজ ধর্মপালন একটি সাংবিধানিক অধিকার। শিখদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে। ধর্মপালনের স্বাধীনতা রয়েছে। মাথায় ওড়না পড়লে পুলিশি কর্তব্য পালনে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ইরান– সৌদি আরব এমনকী লন্ডন পুলিশেও হিজাব পরিধানের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভারতবর্ষ বিশেষ করে প্রগতিশীল রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ব্যতিক্রম কেন হবে সেই প্রশ্নও তুলেছেন ওই তরুণীদের আইনজীবী।