পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ কেওড়াতলায় গান স্যালুটে শেষ বিদায় জানানো হল রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। কেওড়াতলায় আসার আগে রবীন্দ্র সদনে রাখা হয় প্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ (Subrata Mukherjee)। বেলা দুটো পর্যন্ত সেখানেই শায়িত থাকে প্রয়াত নেতার দেহ৷ সেখানে তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ।
সু্ব্রত মুখোপাধ্যায়কে (Subrata Mukherjee) শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বহু মানুষ এবং দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক নেতা, কর্মীরা রবীন্দ্র সদনে ভিড় করেন৷ রবীন্দ্র সদন থেকে বিধানসভা, একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাব হয়ে তাঁর বালিগঞ্জের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশেষে বিকেল ৪টে পরে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য৷
তাঁর শেষযাত্রায় শামিল হন তার অনুগামীরা। ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজিত বসু, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ।
কালীপুজোর রাতেই প্রয়াত হন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বৃহস্পতিবার রাত ৯.২২ মিনিট নাগাদ ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পরেই মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এদিন সন্ধ্যা নাগাদ হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের শৌচাগারে যান তিনি। তারপরেই হঠাৎ করেই অসুস্থবোধ করতে থাকেন তিনি। এরপরেই সব শেষ।
খবর পেয়েই রাত সাড়ে ৯’টা নাগাদ হাসপাতালে ছুটে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্ডিওলজির আইসিসিউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এসএসকেএমে আসেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, নির্মল মাজি।
দীপাবলির আগেই গত ২৪ অক্টোবর সকালে বাড়িতেই অসুস্থ বোধ করেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে কার্ডিওলজি বিভাগে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই তাঁকে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়েছিল।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন মন্ত্রী। পরে তাঁকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন বা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেনও দেওয়া হয়। ক্রমশ তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়। মাঝখানে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ধমনীতে স্টেন্ট বসানোর পরেও অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। একসপ্তাহ ধরে ICCU-তে কাটানোর পর হার মানলেন রাজ্যের মন্ত্রী।
ষাটের দশকে কংগ্রেসী ঘরানার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। জীবন সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ছাত্র রাজনীতি দিয়েই। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গেই উত্থান তার। ১৯৭২-১৯৭৭ তথ্য সংস্কৃতি দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। কাজ করেছেন সিদ্ধার্থশংকর রায়ের সঙ্গে। কলকাতার ৩৬ তম মেয়র ছিলেন তিনি।
২০০০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত মেয়র পদে বহাল ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধির সঙ্গেও সুব্রত মুখোপাধ্যায় যোগাযোগ ছিল নিবিড়। ইন্দিরা গান্ধি মারা যাওয়ার দিনও রাজীব গান্ধির পাশে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনীতিতে আনার পিছনে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন অন্যতম কাণ্ডারী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের সারেঙ্গাবাদের ছেলে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কলকাতায় অ্যানথ্রোপলজিতে বিএসসি নিয়ে ভর্তি হন বঙ্গবাসী কলেজে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্কিওলজি-তে মাস্টার্স। এর পর পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা মিউসিওলজি বা মিউজিয়াম স্টাডিজে।