Sat, July 6, 2024

ই-পেপার দেখুন

হাথরস:  কে এই ভোলে বাবা? বুজরুকির জন্য জেলেও যেতে হয়েছিল এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে

Bipasha Chakraborty

Published: 03 July, 2024, 03:17 PM
হাথরস:  কে এই ভোলে বাবা? বুজরুকির জন্য জেলেও যেতে হয়েছিল এই স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে

 

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক:  আপাদমস্তক সাদা কূর্তা-পাঞ্জাবি থেকে সাদা কোট-প্যান্টেই দেখা যায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবাকে। মঙ্গলবার হাথরসের কাছে মুঘলাগড়ি গ্রামে সৎসঙ্গ চলছিল। সেখানে প্রবচন শুনতে আসে শয়ে শয়ে মানুষ। বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ভোলে বাবা সেই মঞ্চ ত্যাগ করার পরেই তাঁর পদধূলি নিতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। আর তখনই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা। সেই হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১৩৫ জনের। আহতের সংখ্যা ৩০০ পার। কিন্তু অভিযোগে নাম নেই এই ভোলে বাবার। অভিযোগ দায়ের হয়েছে মুখ্য সেবায়েত দেবপ্রকাশ মধুকরের নামে। উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনায় গাফিলতি অভিযোগে কোণঠাসা যোগী সরকার। সমাজবাদীর পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব সরাসরি উত্তরপ্রদেশ সরকারকে দায়ী করেছেন। 

ভোলে বাবার আসল নাম সুরজপাল সিং। দীর্ঘ ১৮ বছর পুলিশে চাকরির সুবাদে তিনি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের ১২টি থানায় পোস্টিং ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি কর্মজীবন থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে সাকার বিশ্ব হরি রূপে পরিচিত হন। উত্তরভারতে তিনি নিজের একটি ধর্মীয় ভাবমূর্তি তৈরি করেন। তার লক্ষ ভক্তদের মধ্যে রয়েছেন উর্ধতন সরকারি আধিকারিক থেকে রাজনৈতিক নেতারা। জানা গেছে, যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে এই তার। উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, রাজস্থান ও দিল্লিতে তার বহু ভক্ত রয়েছে। মানুষের কাছে জনপ্রিয় হলেও তার নামে বহু বিতর্ক রয়েছে। দেশজুড়ে করোনা আতঙ্কের সময় ২০২২ সালের মে মাসে ফররুখাবাদে জমায়েত করেন তিনি। এমনকি বহু জমি হাতানোর অভিযোগ রয়েছে। ২০০১ সালে মৃতকে বাঁচিয়ে দেওয়ার বুজরুকিতে জেলে যান এই ভোলে বাবা।  

ভোলে বাবা নিজে একজন জাটভ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তপশিলি জাতি উপজাতি থেকে ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে ভোলে বাবা অধিক জনপ্রিয়। 

তবে ভোলে বাবা গেরুয়া পোশাক পরিধান করে না। এমনকি তিনি সোশ্যাম মাধ্যমেও জনপ্রিয় নয়। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, এক্স হ্যান্ডেলে তাঁর কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। তাকে সব সময় সাদা কূর্তা, সাদা স্যুট, সাদা জুতো পরেই তাঁকে সব সময় প্রবচন দিতে দেখা যেত। কাসগঞ্জে পাটিয়ালি এলাকায় আশ্রমে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন। 

ভোলে বাবার প্রতিটি সৎসঙ্গে-বহু মানুষের জমায়েত হয়। সূত্রের খবর, এই ধর্মীয়গুরুর অনুষ্ঠানে বিয়ের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ভোলে বাবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার ভলেন্টিয়ারদের নাম সেবাদার। এই ভলেন্টিয়ারাই সমস্ত ব্যবস্থা করে থাকেন। সৎসঙ্গে ভক্তদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা সহ যানযট এড়াতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই ভোলে বাবার প্রবচন শুনতেই সিকান্দারা রাউ শহরে ফুলরাই গ্রামে সৎসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

Leave a comment