আবদুল ওদুদ
ওয়াকফ সম্পত্তিতে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার তোড়জোড় শুরু করল রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড। আর এই অবৈধ নির্মাণ পাঁচ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভার সিভিল ও বিল্ডিং বিভাগের এক্সিকিউটিভ অফিসার। আর এই ঘটনায় রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড আরও একটি ওয়াকফ সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে চলেছে।
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সিইও নাভেদ আখতার জানান– কলকাতা কর্পোরেশনের বরো-১’এর ৬ নং ওয়ার্ডের টি৫/১ ই কাশীপুর রোড এবং টি ৫/১ জি কাশীপুর রোড রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের একটি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তিটি সেখ দোমান ওয়াকফ এস্টেটের। সম্পত্তিটির ইসি নম্বর ১৭৮। ওয়াকফ বোর্ডের সিইও জানান– বোর্ড গত জানুয়ারি মাসে খবর পায় সেখ দোমান ওয়াকফ এস্টেটে অবৈধ নির্মাণ করছে রবি সাউ– তারকনাথ সাউ সহ আরও কয়েকজন। ওয়াকফের ওই জমিতে ইতিমধ্যে পাঁচতলা বিল্ডিং নির্মাণ করে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি কলকাতা কর্পোরেশনকে জানানো হয়। বোর্ডের পক্ষ থেকে কলকাতা কর্পোরেশন বিল্ডিং বিভাগরে ডিরেক্টর জেনারেলের সঙ্গে দেখা করি। ডিরেক্টর জেনারেলকে জানাই সেখ দোমান ওয়াকফ এস্টেটটি ওয়াকফ বোর্ডের ডিরেক্টর ম্যানেজমেন্টের। এটিকে রক্ষা করা অবশ্যই দরকার। এরপরও দখলদাররা কাজ বন্ধ না করে অবৈধ নির্মাণকাজ চালাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশন গত ১৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার নোটিশ করে। রবি সাউ ও তারকনাথ সাউ হেয়ারিং হাজির হলে অবৈধ নির্মাণ সম্পর্কে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। বরো-১-এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দেন পাঁচ দিনের মধ্যে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে রবি সাউ ও তারকনাথ সাউকে। ওই পাঁচদিনের মধ্যে যদি অবৈধ নির্মাণ না ভাঙা হয়– তাহলে কলকাতা কর্পোরেশন নিজেই ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেবে। আর কর্পোরেশন তারকনাথ সাউ ও রবি সাউয়ের বিরুদ্ধে কলকাতা কর্পোরেশন মামলা রুজু করবে। পাশাপাশি সমস্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রবি সাউ ও তারকনাথ সাউয়ের লোকজনকে।
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের ওই জমিতে যে অবৈধ ভবন নির্মাণ হয়েছে– তাতে কোনও ব্যক্তি যাতে বসবাস না করতে পারে– তার জন্য চিৎপুর থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে কলকাতা পুরসভা। ১৫ সেপ্টেম্বর পুলিশ কমিশনারকে চিঠি করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে বলে নাভেদ আখতার জানান। ওয়াকফ বোর্ড গোপন সূত্রে খবর পায় কিছু মানুষকে ওই ভবনে ঢুকিয়ে দিয়ে ভবনের দখল নেওয়ার কৌশল নিতে শুরু করেছে নির্মাণকারীরা। পুলিশ কমিশনারকে দিয়ে কাশীপুর থানা পুলিশ পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয় ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য– কলকাতা কর্পোরেশনের ১৯৮০ সালের আইন অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তিতে কেউ যদি অবৈধ নির্মাণ করে– তাহলে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন সেকশন ৪০০(১) ধারা অনুযায়ী অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে পারবে। সেই ক্ষমতা কলকাতা কর্পোরেশনের রয়েছে।
রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সিইও নাভেদ আখতার জানান– ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি রক্ষায় বোর্ড সবসময় তৎপর। কিন্তু বোর্ডের হাতে নিজস্ব বাহিনী না থাকায় সেটা করে উঠতে পারে না। অবৈধ নির্মাণ বন্ধে সময় লেগে যায়। করোনা বিধিনিষেধে বোর্ডে কোনও কাজে পিছিয়ে নেই। এর আগেও জলপাইগুড়িতে শিল্পসমিতি পাড়ায় দু’টি অবৈধ ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে পেরেছে। সেখানেও কাজ বন্ধ আছে। কাজেই কোনও এলাকায় কেউ যদি ওয়াকফ সম্পত্তিতে অবৈধ নির্মাণ করে ওয়াকফ বোর্ডকে খবর দিলে বোর্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।