রমিত বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: স্বর্ণালী সন্ধ্যার আয়োজন হয়ে গেল কলকাতার জ্ঞান মঞ্চে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর সংগীত শিল্পী অদ্রিজা বসু তার ঠাকুরর্দা পণ্ডিত রামকৃষ্ণ বসুর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে উৎসর্গ করে “রাসমই রামদাস” নামক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। উস্তাদ আমির খান সংগীতায়নের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিনের মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যা অদ্রিজা বসুর কণ্ঠসংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়। রাগ শ্রী এর খেওয়াল পরিবেশনায় শ্রোতারা তার দৃঢ় অনুশীলনের পরিচয় পান। রাগ তিলক কামোদের তারানা পরিবেশনের মাধ্যমে তার পরিবেশনা শেষ হয়। শিল্পীকে তবলা ও হারমোনিয়ামে সঙ্গত করেন দেবাশীষ সিংহ রায় ও অর্পণ ভট্টাচার্য। তিন পর্বে এই অনুষ্ঠান চলে। এই প্রজন্মের প্রখ্যাত সরোদ শিল্পী ইন্দ্রায়ুদ মজুমদারের ‘রাগ–হেম বেহাগে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব মেতে ওঠে।
আলাপ, জোড় এবং ঝালার সুর এবং তালের মূর্ছনায় উপস্থিত সংগীত প্রেমীরা মগ্ন থাকেন। তাঁর সরোদের সুর বাহিত হয়ে রাগ দুর্গার গৎ মাধ্যমে। তবলা বাদনে তাকে সঙ্গ দেওয়া সন্দীপ ঘোষের বাদন উল্লেখযোগ্য।
শেষ পর্বে কণ্ঠসংগীতে উস্তাদ আরশাদ আলী খান রাগ–রাগেশ্রী পরিবেশন করেন। বিলম্বিত স্বর বিস্তার , মিরখান্ডডি সরগম এবং তার সঙ্গে ত্রিতালের ছন্দে শিল্পী অপূর্ব এক সুরের মাধুর্য তৈরি করেন। সেদিনের অনুষ্ঠান রাগ দেশের সুরের রেশ রেখে শেষ হয়। নীলাঞ্জন ঘোষ এবং সারওয়ার হোসাইনের তবলা এবং সারেঙ্গীর সঙ্গত এক অদ্ভূত সুরমহলের সৃষ্টি হয়।
আদৃজা বসু জানান, “এক সময়ে আমাদের এই প্রতিষ্ঠান নিয়মিত সংগীতানুষ্ঠান আয়োজন করত। তারই পুনরাবৃত্তির চেষ্টা করছি আমরা।”
তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিল্পীমহলের বেশ কিছু গুনীজনেরা। সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা তৃষা সরকার সমস্ত অনুষ্ঠান শব্দমালায় সাজিয়ে তোলেন।
ওস্তাদ আমির খানের ঐতিহ্যকে তাঁর যে সকল শিষ্যকুল বহন করেছেন তাঁর মধ্যে অন্যতম নাম পন্ডিত রামকৃষ্ণ বসু। ইন্দোর ঘরানার একজন মশালবাহক হিসেবেই তিনি পরিচিত ছিলেন। পণ্ডিত রামকৃষ্ণ বসুর তত্ত্বাবধানে অদ্রিজা বসুর প্রাথমিক সংগীত শিক্ষা শুরু হয়, তারপর তিনি বিনকার ঘরানায় সংগীতাচার্য পণ্ডিত জয়ন্ত বোসের কাছ থেকে সংগীত শিক্ষার তালিম নেন।