পুবের কলম প্রতিবেদকঃ রবিবার পার্ক সার্কাস হজ হাউসে শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু দফতরের সচিব গোলাম আলি আনসারি বলেন– শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের গর্ব। পাশাপাশি শিক্ষক সংগঠনগুলির ভূমিকাও প্রশংসাযোগ্য। পড়ুয়া ও শিক্ষকদের স্বার্থে কাজ করছে শিক্ষক সংগঠন। সেই কাজ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন করে চলেছে।
সংখ্যালঘু দফতরের স্পেশাল সেক্রেটারি সাকিল আহমেদ শিক্ষকদের ভূমিকা উল্লেখ করার পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলির উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন– রাজ্যের মাদ্রাসাগুলির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বরাদ্দের আবেদন জানানো হলে বিভিন্নভাবে উপেক্ষার নজির রয়েছে। কেন্দ্র সরকার মাদ্রাসাগুলিকে বরাদ্দে অবহেলিত করলেও রাজ্য সংখ্যালঘু দফতর মাদ্রাসার উন্নয়নে সব রকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান শিক্ষকদের গুরুত্ব ও কর্তব্য উল্লেখ করেন। তিনি বলেন– রাজ্যের মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষকদের সম্মান দিয়েছেন। মু্খ্যমন্ত্রী বলেছেন– শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের গর্ব। আহমদ হাসান ইমরান আরও বলেন– হজরত মুহাম্মদ (সা.)ও মানবতার জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। মুহাম্মদ সা. শিখিয়েছেন– সমাজ ও পরিবার কিভাবে চলবে– কিভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে– আর তিনি খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন জ্ঞানচর্চার উপর। আর প্রকৃত সত্য হল– আমরা জ্ঞানী হলেই পৃথিবীকে বুঝতে পারব। সৃষ্টি কর্তাকে চিনতে পারব। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করতে জ্ঞানচর্চা জরুরি। পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। এদিন হজ হাউসে করোনা বিধি মেনে শিক্ষক দিবস পালিত হচ্ছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ নকি বলেন– মা-ই প্রথম শিক্ষিকা। তাঁকে আগে সম্মান জানানো প্রয়োজন। পাশাপাশি ছোটদের সম্মান প্রদর্শন করতে হবে বড়দের। পাশাপাশি তিনি বলেন– শিক্ষকদের কোনও অবসর হতে পারে না। শিক্ষকদের দায়িত্ব রয়েছে। শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজের ‘পিলার’।
সমাজে শিক্ষকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. আবু তাহের কামরুদ্দিন। এদিন তিনি বলেন– শিক্ষকরা সম্মানীয়। ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকদের সম্মান জানাবে– এটাই প্রত্যাশা। শিক্ষক দিবস শিক্ষকদের জন্য সমাজ ও ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রদ্ধা বয়ে আনে।
এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির আপ্তসহায়ক জুলফিকার হাসান বলেন– বলা যেতে পারে– মানুষ একে অপরের শিক্ষক। কোনও মানুষকে ‘অশিক্ষিত’ বলতে নেই। এদিনের মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার সিলেবাসের প্রশংসা করেন তিনি। মাদ্রাসার সিলেবাস অনেক তথ্যবহুল।
রাজ্য সংখ্যালঘু দফতরের যুগ্ম সচিব ওবাইদুর রহমান বলেন– শিক্ষকদের কর্তব্য রয়েছে মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যে সার্বিক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তিনি এদিন মাদ্রাসার উন্নয়ন উল্লেখ করার পাশাপাশি শিক্ষকদের সম্মান প্রদর্শন করার বিষয়েও পরামর্শ দেন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি এ কে এম ফারহাদ রাজ্য সরকারের শিক্ষার উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
এদিন ৫০-এর বেশি মাদ্রাসা ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সম্মান জানানো হয়। হাইমাদ্রাসা– ও স্কুলের ১০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার মধ্যে রয়েছেন– আবদুল হান্নান লস্কর– আবুল বাসার– সুনয়ন বন্দোপাধ্যায়– শর্মিলা সাহা– মনামি নাগ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক মনজুর আহমেদ– পীরজাদা রাকিবুল আজিজ– ফিরোজ হোসেন– সাবিনা ইয়াসমিন– মাওলানা আবদুল হামিদ প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন– প্রধান শিক্ষক ইরফান আলি বিশ্বাস।