পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ আজ সাংগঠিক বৈঠক থেকেই নির্দল প্রার্থীদের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা নজরুল মঞ্চ থেকেই নির্দল প্রার্থীদের উদ্দেশে কড়াবার্তা দিয়ে বলেন, নির্দল হয়ে জিতে দলের প্রার্থীদের হারাচ্ছেন। এসব মেনে নেওয়া হবে না। আগেই সতর্ক করা হয়েছে। এবার না শুনলেই শো-কজ। এদের নাম ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বার বার সতর্ক করা হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টিকিট না পেলেই নির্দল হয়ে লড়ছে। ২/৩ জনকে সতর্ক করা হয়েছে। দরজা খোলা আছে, চলে যান। এদিন নজরুল মঞ্চ থেকেই নির্দল প্রার্থীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, একটা নির্বাচিত সরকারকে কাজ না করতে দেওয়ার চক্রান্ত। তৃণমূল ভদ্রতা করে, দুর্বল নয়। মানুষের ওপরে ভরসা রাখতে হবে। টিকিট না পেলেই নির্দল হয়ে যাচ্ছে। আর দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এবার দল থেকে নাম কেটে দেওয়া হবে। সারাক্ষণ বসে এরা সংবাদমাধ্যমে উলটো পালটা বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছে। এদের নাম ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিন মমতা বলেন, তৃণমূল দলে যে নতুন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি তৈরি হল সেই কমিটিতে থাকছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বস্কী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম পার্থ চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি হচ্ছেন ডেরেক ও ব্রায়েন, দেব। সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ভট্টাযচার্য। ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ সম্পাদক। উত্তর কলকাতার দায়িত্বে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মমতা পুরভোটে জয়ী প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, জিতে গেলেই ঘরে বসে থাকলে চলবে না। বাড়াতে হবে জন সংযোগ। সারাক্ষণ কাজ করতে হবে।
জেলা তৃণমূল নেতাদের মূল দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হবে। লবি করে এখানে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান হওয়া যাবে না। ভোটে জিতে গেলাম আর ভুলে গেলাম, সেটা হবে না। ট্রেড মিলে হাঁটার চেয়ে এলাকায় ঘুরেস জনসংযোগ বাড়ান। নিজেকে অনেকেই কেউকেটা ভাবে সেটা এখানে হবে না। নিজের পয়সা খরচ করে যান। পুরপ্রধানকে সবাই নিয়ে চলতে হবে।
বিধানসভায় গতকালের ঘটনায় মন্তব্য করে বলেন, বিজেপি অসভ্যতামি করেছে। বিজেপি বিধায়কদের মোকাবিলা করতে হবে তৃণমূল বিধায়কদেরই। এদিন সাংগঠিক বৈঠক থেকেই দলের প্রার্থীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মমতা বলেন, বিধানসভাকে স্কুল কলেজের মতো জ্ঞান করতে হবে। এলাম আর চলে গেলাম সেটা হবে না। ছুটির সময়েই যাবেন। বিধানসভায় নিয়মিত আসতে হবে বিধায়কদের। অনুমতি নিয়ে তবেই অনুপস্থিত।
সাংবাদিকদের প্রতি এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম টিআরপি বাড়ানোর জন্য খবর করছেন। শুধু টিআরপি বাড়ানোর জন্য এগুলো করবেন না। আমরা সাংবাদিককে বন্ধু বলে মনে করি। আমরা বিজেপির মতো নই। আমরা সহজ, সরল মানুষ। মিথ্যাকে থামাতে হবে। কমুন্যাল ভায়োলেন্স ছড়াচ্ছে। মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। আপনাদের টিআরপি থাকলে আমাদেরও গলা আছে। বাংলার মতো স্বাধীনতা কোথাও পাবেন না। এখানের মতো বাক স্বাধীনতা কোথাও নেই। আপনাদের টিআরপি থাকলে আমাদের গলা আছে।
স্কুলে চলা মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে মমতা বলেন, এরা কারা যারা এই সময়ে স্কুল-কলেজের সামনে মিটিং, মিছিল করছে। পরীক্ষার সময় মিটিং, মিছিল ভয়ঙ্কর।
এদিনের সাংগঠিক বৈঠক থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকের পর থেকে জন সংযোগ যাত্রার সূচনার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২১ জুলাই ২ মে জনসংযোগ হবে। তার পর দিওয়ালির পর থেকে শুরু হবে তৃতীয় পর্যায়ের জনসংযোগ। তিনধাপে চলবে সেই জনসংযোগ।
এদিন নজরুল মঞ্চেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দলে যোগ দেন জয় প্রকাশ মজুমদার। ঘাসফুলে যোগ দিয়েই দলের সহ সভাপতির পদ পান জয় প্রকাশ মজুমদার।
আজ লেক কালীবাড়িতে পুজো দিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে আসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নজরুল মঞ্চে এই সাংগঠিক বৈঠক হয়। ছিলেন সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, পি কে প্রমুখ।