বিশেষ প্রতিবেদকঃ শনিবার মিল্লি আল আমীন গার্লস কলেজ একইসঙ্গে পালন করল ফাউন্ডার্স ডে এবং ফাউন্ডেশন ডে। এ দিন মিল্লি আল আমীন কলেজ যেন নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হল। কলকাতার বেনিয়াপুকুরে প্রায় ৩০ বছর আগে স্থানীয় বিদ্বজ্জনদের প্রচেষ্টায় সূচনা হয়েছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এর প্রতিষ্ঠাতাদের অনেককেই এ দিন সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
মিল্লি আল আমীন কলেজের বর্তমান ওয়ার্কিং ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব আমিরউদ্দীন (ববি) এই অনুষ্ঠানে বলেন– আমাদের যা ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে তাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান– হাসপাতাল এসব তৈরি করার জন্য আমাদের কারও কাছে হাত পাতার কথা নয়। আমি নিজে এ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করব। বর্তমানে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ আমিরউদ্দীন (ববি) ব্যক্তিগতভাবেও বাংলার রাজধানীতে শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দারিদ্র্য-পীড়িত এলাকায় তিনি কয়েকটি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। অনেকে বলেন– আমিরউদ্দীন (ববি) স্যার সৈয়দকে অনুসরণ করে কাজ করছেন। আমিরউদ্দীন (ববি) আরও বলেন– শুধুমাত্র একটি মিল্লি কলেজে হবে না– আমাদের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য অনেকগুলি আল আমীন মিল্লি কলেজ গড়তে হবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি বলেন– শিক্ষার কোনও শেষ নেই। রাজ্যে বহু কলেজ রয়েছে। মিল্লি আল আমীন কলেজ বহু বছর ধরে শিক্ষার জন্য কাজ করে আসছে। কলেজের ছাত্রীরা যাতে ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করতে পারে তার জন্য শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন– আপনাদেরও সক্রিয় হতে হবে। সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি পবিত্র কুরআন থেকে উদ্ধৃত করে শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন হায়দার। তিনি বলেন– আমরা আশা করছি– মিল্লি আল আমীন কলেজ এবার থেকে ভালো করে চলবে। তিনি মিল্লি আল আমীন কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও তুলে ধরেন। এখানে বাংলা বিভাগ খোলারও পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে বাংলা বিভাগের পড়াশোনাও শীঘ্রই শুরু হবে। মেয়েদের এই কলেজের জন্য অনেকেরই কুরবানি রয়েছে।
মিল্লি কলেজের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন– সাংসদ নাদিমূল হক সাহেবও। তিনি বলেন– কলেজে ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বিভাগ চালু করলে তা জনপ্রিয়তা পাবে।
এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন– পরিচালন কমিটির সম্পাদক মুহাম্মদ জাহাঙ্গির– জনাব মানজার জামিল সাহেব প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সাবেক সাংসদ ও ‘পুবের কলম’-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান– সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান মুমতাজ সংঘমিতা– সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জনাব হাজী মুস্তাক সিদ্দিকী– রাফে সিদ্দিকী– শাহনওয়াজ আরফি– এ মুরাদ প্রমুখ।
মিল্লি কলেজের এই অনুষ্ঠানে ছাত্রীরা হামদ্– ইকবালের গান ও রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করে।
কলেজে নয়া নিযুক্ত প্রিন্সিপাল ড. সুনন্দা হালদারকে এ দিন কলেজে ছাত্রী ও শিক্ষিকারা স্বাগত জানায়।
উল্লেখ্য– মিল্লি আল আমীন কলেজের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল স্বাধীনতার পর বামফ্রন্ট সরকারের আমলে। কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার এই কলেজটিকে কোনও মতেই সংখ্যালঘু চরিত্রের কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পরে মাইনরিটি এডুকেশন কমিশন থেকে মিল্লি কলেজ সংখ্যালঘু চরিত্রে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে কালিম্পংয়ের একটি খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠান ও মিল্লি কলেজের সংখ্যালঘু চরিত্র আরও পাকাপোক্ত হয়। এই কলেজ প্রতিষ্ঠার পিছনে বেঙ্গালুরুর আল আমীন মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ড. মুমতাজ আহমেদ-এর অনুপ্রেরণা ও সহায়তা ছিল।