পুবের কলম প্রতিবেদকঃ করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ হারিয়েছিলেন রেলের হকাররা। লকডাউন মিটলে এবং পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক হলে ফের রেলের হকারিতে নিযুক্ত হওয়ার আশায় ছিলেন অনেকে। কেউকেউ আবার অন্য পেশায় সাময়িকভাবে থেকে রেল হকারিতে ফের ফিরে এসে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চেয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে বহু দিন ধরে হকাররা রেল স্টেশন চত্বরে যাননি। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রেল স্টেশন চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করছেন। ঠিক সেই সময় রেলে হকারি করা যাবে না বলে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আরও এই নিয়েই এ রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। রেল কর্তৃপক্ষদের ডেপুটেশনও জমা দিচ্ছেন। রবিবার দুপুর সাড়ে এগারোটা নাগাদ মিছিল করে কয়েকশো হকার শিয়ালদহ স্টেশনে হাজির হন। সেূানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন রেলওয়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের হকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাপি ঘোষ– ছিলেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (আইএনটিটিইউসি) প্রদীপ কুন্ডু সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বরা।
তাদের দাবি কোনওভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। যদি করা হয় তাহলে পুনর্বাসন দিতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন স্টেশনে মারাত্মক আন্দোলন শুরু হবে।সব মিলিয়ে রেলের উচ্ছেদের নোটিসকে ঘিরে রাজনীতির চাল আর পাল্টা কৌশলী চালে বিপদে পড়েছেন উচ্ছেদ হতে চলা সাধারণ মানুষজন। এই অবস্থায় তাঁদের অবস্থা কী হবে তা নিয়ে বেশ আতঙ্কিত তাঁরা। কারণ রেল কর্তৃপক্ষ যদি নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে তাহলে ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় যাবেন তাঁরা।
এখন এই মানুষজনদের মাথার ছাদ থাকে কিনা– বা আদৌ থাকলে কতটা সুরক্ষিত থাকবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ একের পর এক বেসরকারিকরণ শুরু করেছে। এতে রেলের কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। রেলের এক আধিকারিক বলেন– হকার উচ্ছেদ না করার দাবিতে স্মারকলিপি জমা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এদিকে ইউনিয়নের বক্তব্য– হকারদের যাতে কোনও ভাবে স্টেশন চত্বর ও ট্রেন থেকে উচ্ছেদ না করা হয় তার জন্য রাজ্যের মু্যূমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে বার্তা দিতে চাই রেলকে। রেল কর্তৃপক্ষ যাতে হকারদের প্রতি সহৃদয় হয় তার দাবি জানিয়েছেন হকাররা। এদিন এক হকার মিছিলে হাঁটার সময় জানালেন– বহুদিন ধরে কাজ নেই– কী ভাবে চলবে– আগে হকারের উপর প্রতিদিন চলতো। কিন্তু এূন যে ভাবে সংসার চলছে– তা বলার নয়। দুমুঠো অন্ন জোগাড় করতে গিয়ে আমাদের ‘মুখের রক্ত ওঠা’র জোগাড় হয়ে পড়েছে।