উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: সুন্দরবনের ভাগবতপুর কুমির প্রকল্পের বেহাল দশা। বেড়াতে এসে কুমির প্রকল্প দেখে আশাহত হয়ে বাড়ি ফিরছে পর্যটকরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা ব্লকের ভাগবতপুর কুমির প্রকল্প এশিয়া ফেমাস পর্যটনকেন্দ্র নামে কাগজ কলম এবং ইতিহাসের পাতা দখল করে পেয়েছে। বর্তমানে যার বেহাল অবস্থা। সাধারণত কৃত্রিম উপায়ে কুমিরের বাচ্চা ফোটানো এই প্রকল্পের অভিনব পদ্ধতি। আর সেই পর্যটন কেন্দ্রে আমফান ইয়াসে ভেঙে যাওয়া মিউজিয়ামের ঘরটি এখনো পর্যন্ত সংস্কার হয়নি। দর্শনার্থীরা দর্শণের প্রারম্ভে দেখতে পান বাড়িটির ধ্বংস স্তুপ। একবার পর্যটন কেন্দ্রে এলে দ্বিতীয়বার কেউ আসতে চাইছে না । ত্রিরিশ টাকার টিকিট কেটে কুমির প্রকল্পের ভিতরে ঢুকতে হয় কুমির দেখার জন্য, কিছুটা এগিয়ে যাবার পর বিভিন্ন বোর্ডে লেখা রয়েছে ১৯৭৬ সালে কুমির প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। কুমির সাধারণত ৫০ বছর বাঁচতে পারে, ১৫ থেকে ২০ মিটার জলের নিচে থাকতে পারে, এদের দাঁতের সংখ্যা ৬৪ থেকে ৬৯ টিপূর্ণ বয়স্ক কুমিরের। মার্চ মাসে এরা মিলিত হয়, মে মাসে ডিম পাড়ে, প্রায় ৭০ টি, ৮০ থেকে ৯০ দিন নির্দিষ্ট জায়গায় ডিম রাখার পর কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চাগুলিকে জন্ম দেওয়া হয়। অতচ কুমিরের ডিমগুলি সংগ্রহ করে এনে বিজ্ঞানের অভিনব প্রযুক্তির দ্বারা ডিমগুলি থেকে বাচ্চা বার করা হয়। তারপর বাচ্চা গুলিকে পরিচর্যা করে এক বছর বয়স হয়ে গেলে বিভিন্ন নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে সেই কুমির প্রকল্প দেখতে ঢুকলেই আশাহত হচ্ছেন পর্যটকরা। টিকিট কেটে ঢুকলেই সামনেই পড়বে মিউজিয়াম, যেখানে রাখা আছে কুমিরের ডিম। কিন্তু আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত এই মিউজিয়ামটি বা ঘরটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারি আধিকারিক থাকা সত্ত্বেও তাদের চোখে একবারও পড়েনি বেহাল দশার চিত্র। নেওয়া হয়নি কোনও সংস্কার উদ্যোগ।
২০২০ সালে আমফান ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায় পর্যটন কেন্দ্রটি। কিন্তু দেখতে দেখতে প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও ঘর সংস্কার থেকে পর্যটন কেন্দ্রটি সংস্কার করা হয়নি। এক পর্যটক বলেন, মানুষকে ধোকা দিয়ে নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা টিকিট। ভিতরে কিছুই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ভগ্ন ঘরে বিভিন্ন জায়গায় ভাঙ্গা বেঞ্চ দেখতে হবে আশা করিনি। যদিও এবিষয়ে সরকারি কোনও আধিকারিক মুখ খোলেননি।