পুবের কলম প্রতিবেদকঃ পশ্চিমবঙ্গের ‘ছাত্র সমাজ’ -এর ব্যানারে আগামী ২৭ আগস্ট, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের দিন। একই দিনে পড়েছে ইউজিসি নেট পরীক্ষা। এই অবস্থায় রাজ্যের পুলিশের কাছে দুটি চ্যালেঞ্জ। প্রথমত যাতে নবান্ন অভিযানের দিন কোনও অশান্তির পরিবেশ তৈরি না হয়। অন্যদিকে নেট পরীক্ষার্থীদের যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে কোনও অসুবিধে না হয়। এই জোড়া দায়িত্ব নিয়ে তৎপর পুলিশ।
সারা শহর জুড়ে নিরাপত্তার কঠোর করা হচ্ছে। নবান্ন অভিযানের দিনে যাতে আইনশৃঙ্খলা কোনওভাবে বিপন্ন না হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে ওইদিন ২ হাজারেরও বেশি পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। জেলা থেকে পদস্থ পুলিশ কর্তাদের এজন্য কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে মোতায়েন থাকবে পুলিশ বাহিনী। রবিবার রাজ্য পুলিশ এই আশ্বাস ছড়িয়ে দিল সমাজমাধ্যমে।
এদিকে লালবাজারের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে আজ ২৬ আগস্ট সোমবারই হাওড়ার শরৎ সদনে আসবেন। তাঁদের সকলকে নবান্ন অভিযানের দিনের ডিউটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বিকেল চারটের মধ্যেই কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট করবেন তাঁরা। হাওড়ার শরৎ সদনে ২৭ তারিখের অভিযান শেষ হলেই তাঁরা নিজ নিজ কাজের জায়গায় ফিরে যাবেন।
এদিকে নবান্ন অভিযানের ডিউটির জন্য এসপি, ডিএসপি থেকে শুরু করে অ্যাডিশনাল ডিসি এবং ইন্সপেক্টর, সার্কেল অফিসারদের ডাকা হয়েছে। শিলিগুড়ি, ব্যারাকপুর, তমলুক, ঝাড়গ্রাম, বারুইপুর, বারাসত, রানাঘাট, বসিরহাটসহ একাধিক জেলা থেকে পুলিশ অফিসারদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, যেসব অফিসাররা আসবেন তাঁরা যেন ঢাল, লাঠি, হেলমেট, বডি প্রোটেক্টিভ গিয়ার, রেনকোট, ছাতা ইত্যাদি নিজেদের সঙ্গে রাখেন।
নবান্ন অভিযানের দিনে ২১ জন আইজি-ডিআইজি এবং ১৩ জন এসপি-ডিএসপি পদমর্যাদার এবং ২২ জন এসি, ২৬ জন ইন্সপেক্টরসহ ২ হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। মহিলা পুলিশ কর্মী মোতায়েনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কমবয়সী, বুদ্ধিমান এবং শারীরিকভাবে সক্রিয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
এই অভিযানে উদ্যোক্তা হিসেব ছাত্র সমাজের কথা বলা হলেও ছদ্ম সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে পদ্ম এবং বাম শিবিরের জড়িত থাকা ইঙ্গিত মিলেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে গেরুয়া দলের ছাত্র এবং যুব সংগঠনের জমায়েত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকেও জড়ো হয়ে নবান্ন অভিযানের সূচি রয়েছে। যদিও রাজনৈতিক পতাকা ছাড়া নবান্ন অভিযান নিয়ে বিজেপির মধ্যেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
তাহ অভিযানের দিন কার্যত দুর্গ করে ফেলা হবে নবান্ন এবং সংলগ্ন এলাকাকে। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়াও রাজ্যের সচিবালয়গুলিকেও এদিন নিরাপত্তার কড়া চাদের মুড়ে ফেলা হবে। নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় কোনওভাবেই যাতে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে।
আগামী ২৭ তারিখে নবান্ন অভিযানের জন্য কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং ফোরশোর রোডের যান চলাচল যাতে কোনওভাবে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই এদিন পরিস্থিতি সামাল দেবেন রাজ্যের পুলিশ বাহিনী। তবে অতীতের সঙ্গে মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের পার্থক্য রয়েছে। এর আগে সব অভিযান ছিল রাজনৈতিক কিন্তু এবার কোনও কোনও রাজনৈতিক পতাকা না থাকায় অভিযান ঠেকানোর জন্য আরও তৎপর হচ্ছে রাজ্য পুলিশ।