পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের সাতনার আকাওনা গ্রামের প্রথম দলিত মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছিলেন শ্রদ্ধা সিং। ২৮ বছরের শ্রদ্ধা ২০২২ সালে পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই ইতিহাস গড়ার সময়ও তাকে বিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল। ঠাকুর অধ্যুষিত গ্রামে তিনি দলিত হয়ে পঞ্চায়েত প্রধান হবেন, এটা মেনে নিতে পারছিল না অনেকেই। ১৬০০ ভোটারের ওই গ্রামে ৫০ শতাংশ ভোটারই ঠাকুর পরিবারের অর্থাৎ ‘উচ্চবর্ণের’। ২০২২ থেকেই গ্রামের উন্নতির কথা ভেবে কোনও কাজে হাত দিলে বারবার বাধা দিত এই উচ্চবর্ণের মানুষজনেরা। গত ১৫ ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন সব সীমা অতিক্রম করেন এলাকার উচ্চবর্ণের প্রতিনিধিরা। স্বাধীনতা দিবসের সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার কথা ছিল শ্রদ্ধা সিং এর। পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে সেই অধিকার তিনি আইনগতভাবেই পেয়েছেন। কিন্তু পৌঁছে তিনি জানতে পারেন, তার আসার আগেই উপপঞ্চায়েত প্রধান ধর্মেন্দ্র সিং বাঘেল পতাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন। শ্রদ্ধাকে এই বিষয়ে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি কেউই। তার ঠিক দু’দিন পর ১৭ ই আগস্ট গ্রাম সভার আলোচনায় শ্রদ্ধা পৌঁছে একটি চেয়ার চাইলে উপপঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি বলেন, চেয়ারের প্রয়োজন হলে সেটা বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে হবে। তা না হলে মেঝেতেই বসতে হবে অথবা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।
দিনের পর দিন এই অবহেলা ও অপমান সহ্য করার পর শেষ পর্যন্ত লিখিতভাবে শ্রদ্ধা অভিযোগ জানিয়েছেন পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং পাটেলকে। সেখানে তিনি বর্ণনা করেছেন কিভাবে তাকে দিনের পর দিন অপমানিত হতে হয় শুধুমাত্র দলিত হওয়ার কারণে। শ্রদ্ধা বলেন, ‘আমি মহিলা শুধু এই জন্য নয় বরং আমি দলিত বলেই ওরা এ ধরনের আচরণ করে। বারবার বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে আমাকে।’ ঐ চিঠিতে দলিত মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান লেখেন, ‘এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত আহত। কিন্তু আমি হাল ছাড়ব না। যে অন্যায় ও বৈষম্য হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমি আওয়াজ তুলবই।’
মন্ত্রীর পাশাপাশি পঞ্চায়েত রাজ পরিষদ এবং মধ্যপ্রদেশের সরপঞ্চ সঙ্ঘ এ অভিযোগ জানান শ্রদ্ধা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভোপালে এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হবে; সেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার চাইবেন তিনি। ভীম আর্মির আইনজীবী বিজয় কুমার আজাদ জানিয়েছেন, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাবে তাদের দল। বিভিন্ন রাজ্যে স্মারকলিপি জমা দেবে ভীম আর্মি।