গান্ধীনগর, ৩০ আগস্ট: শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’। আরব সাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে গুজরাতের ভুজ অঞ্চল থেকে ১৯০ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তর–পশ্চিমে এবং পাকিস্তানের করাচি থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে দুই দেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এর আগে ১৯৪৪, ১৯৬৪ এবং ১৯৭৬ সালের অগাস্ট মাসেও আরবসাগরে পৌঁছনোর আগে ভূমিভাগেই গভীর নিম্নচাপ ঘণীভূত হয়েছিল। তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়নি। দীর্ঘ বছরের ব্যবধানে আগস্ট মাসে ফের কোনও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে আরব সাগরে। শুধু তাই নয়, সেক্ষেত্রে বিগত ৮০ সালের মধ্যে এটি হবে চতুর্থ বিরল পরিস্থিতি যেখানে ভূমিভাগ থেকে সমুদ্রে পৌঁছনোর মধ্যেই সাইক্লোন সক্রিয় হবে। বর্তমানে সৌরাষ্ট্র কচ্ছের উপর অবস্থান করছে একটি গভীর নিম্নচাপটি। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে। এর পর গত ২ দিন ধরে ভারতের পশ্চিম উপকূলে ব্যাপক নিম্নচাপের আকার নেবে। সমুদ্র উত্তাল হবে। মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘আসনা’ দিয়েছে পাকিস্তান।
আবহাওয়া দফতরের দাবি, এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে গুজরাত সহ উত্তর মহারাষ্ট্রের উপকূলে। ৬৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাত। এই বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত গুজরাতের কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্রে প্রায় ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সাধারণত ওই এলাকায় সর্বোচ্চ ৪৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ফলে চলতি বছর বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। এর উপর ‘আসনা’র জেরে হাল আরও খারাপ হতে পারে গুজরাতবাসীর। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই তৎপর প্রশাসন। বন্যায় ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৩২ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। ৮ হাজার ৭০০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মৌসম বিভাগের তরফে গুজরাতের ভারুচ, কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র জেলায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি চলবে। দ্বারকা, বরোদা, মোরবি-সহ একাধিক জেলায় সেনা নামিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর বৃহস্পতিবার এক পূর্বাভাসে সিন্ধের প্রাদেশিক সরকারকে ঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে বলেছে। সিন্ধের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক বর্ষণ হচ্ছে বলেও জানা গেছে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, বর্ষণের কারণে ঝড় আসার আগেই সিন্ধের কয়েকটি স্থানে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে।
প্রভাব
পড়তে পারে বাংলায়। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, নদীয়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা সহ দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার আজ শুক্রবার ৫ জেলার হলুদ সর্তকতাও জারি করা হয়েছে।