গান্ধীনগর, ৩১ আগস্ট: গর্ভধারণের সময় থেকেই একজন মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কের একটা আশ্চর্য সুন্দর যোগসূত্র তৈরি হয়। সেই অটুট বন্ধন কোনওদিন ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয় না সাধারণের পক্ষে। কিন্তু সেই সম্পর্কের যখন হত্যা হয়? তখন কি বার্তা যায় একটি সমাজে? নিজের মাকে খুন করে ইন্সটায় পোস্ট দিল ছেলে। এমনকি সমাজ মাধ্যমের সাইটে সে লিখলো ‘ মা তোমাকে খুন করার জন্য আমি দুঃখিত’। পাশে মায়ের ছবি দিয়ে ইন্সটাগ্রামে পোস্ট দিয়েছে ছেলে। বৃহস্পতিবার পাশবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের রাজকোটে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সরকারি আবাসনে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছেলের কুকীর্তিতে হতবাক মানুষ।
মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পরে অভিযুক্ত ছেলে তার ইনস্টাগ্রামে তার মায়ের একটি ছবি পোস্ট করে তার স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘দুঃখিত মা আমি তোমাকে হত্যা করেছি, আমি তোমাকে মিস করব, ওম শান্তি”। অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
রাজকোট (পশ্চিম) এসিপি রাধিকা ভরদ্বাজ জানান, ভরত নামে এক ব্যক্তি পুলিশকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান, তারপরে পুলিশ তার বাড়ি থেকে ৪৮ বছর বয়সী জ্যোতিবেন গোসাইয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ তাঁর ছেলে নীলেশ গোসাইকে জিজ্ঞাসা করতে সে মায়ের খুনের কথা স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে নীলেশ জানায়, সে প্রথমে তাকে ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করলেও মা ছুরিটি কেড়ে নেয়। রক্তপাত ঘটে। এরপর সে তার মাকে কম্বল দিয়ে মুখ ও গলা চেপে শ্বাসরোধ করে খুন করে। মাকে খুনের কথা সে তার বন্ধু ভরতকে ফোন করে জানিয়েছিল। মায়ের ছবি দিয়ে খুনের কথা ইন্সটাগ্রামেও জানায় নীলেশ।
নীলেশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তার মা মানসিকভাবে অসুস্থ। সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল না। ঘটনার দিন দুজনের মধ্যে ঝগড়া চলছিল, তখনই মায়ের সঙ্গে এই নারকীয় কাণ্ড ঘটায় নীলেশ। জানা গেছে, জ্যোতিবেন একজন বিবাহ বিচ্ছিন্ন মহিলা ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তার ডিভোর্স হয়েছিল। তার পর থেকে ছেলে নীলেশকে নিয়েই ছিল জ্যোতিবেনের জীবন। তবে মা ছেলের সম্পর্ক আর পাঁচটি সম্পর্কের মতো ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন জ্যোতিবেন, তবে একমাস তিনি ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। ফলে দিন দিন তার আচরণ আরও অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। জ্যোতিবেনের দেহ নিতে অস্বীকার করেন তার প্রাক্তন স্বামী সহ তার অন্যান্য সন্তানরা। পুলিশি তৎপরতায় দাহ করা হয়।