ইসলামাবাদ: আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তাদের আইনজীবী খালিদ ইউসুফ চৌধুরি।
২০২২ সালের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও এমনকী ব্লাসফেমি তথা ধর্ম অবমাননার মতো অভিযোগে প্রায় ২৮০টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিকে দেওয়া মামলাগুলোর অন্যতম আল-কাদির ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট মামলা অন্যতম।
ইমরান খান ও বুশরা বিবির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হত আল কাদির ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট। ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার অভিযোগ করে যে, ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য পাকিস্তানের একজন ধনী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাদের ট্রাস্টের জন্য কোটি কোটি টাকার জমি গ্রহণ করেছেন।
এই অভিযোগে পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থা দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। অন্যসব মামলার মতো আল-কাদির ট্রাস্প মামলাকেও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেন ইমরান খান।
এরপর এই মামলায় ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এর চার মাস পর আগস্ট মাসে তোশাখানা মামলা নামে পৃথক এক দুর্নীতির মামলায় তাকে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে এখনও কারাগারে রয়েছেন ৭২ বছর বয়সি এই নেতা।
চলতি মাসে (১৭ জানুয়ারি) আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে ১৪ বছর ও বুশরা বিবিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এর আগে এই মামলায় গতবছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে চারটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেছেন ইমরান খান ও বুশরা বিবি। কিছুদিন পর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী খালিদ ইউসুফ চৌধুরি। আপিল আবেদনে বলা হয়েছে যে, ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক যা ‘তার বিরোধীরা ন্যাশনানল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। আবেদনে যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, ট্রায়াল কোর্ট প্রমাণ ভুলভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।