পুবের কোলোম,ওয়েবডেস্ক : সারা দেশে মোট ৯৯৪টি ওয়াকফ সম্পত্তি বিচ্ছিন্ন – বা অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে। এর মধ্যে তামিলনাড়ুতে সর্বাধিক ৭৩৪টি। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদকে এই তথ্য জানিয়েছে। সিপিআইএম সাংসদ ও আইন প্রণেতা জন ব্রিটাসের এক সেট প্রশ্নের লিখিত উত্তরে, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক এই সংখ্যা দিয়েছে।
ভারত সরকার দেশের ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির একটি বিস্তৃত তথ্য প্রদান করে জানিয়েছে যে মোট ৮,৭২,৩৫২টি ওয়াকফ সম্পত্তি ১৯৫৪ সালের ওয়াকফ আইন এবং ১৯৯৫ সালের পরবর্তী ওয়াকফ আইনের অধীনে নিবন্ধিত হয়েছে৷ এই সম্পত্তিগুলি, যার মধ্যে স্থাবর এবং অস্থাবর উভয় সম্পত্তি রয়েছে, রাজ্য ওয়াকফ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হয়, এই বোর্ডগুলিতে সাধারণ সুপারিনটেনডেন্স ন্যস্ত থাকে। ওয়াকফ অ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অফ ইন্ডিয়া পোর্টালে উপলব্ধ তথ্য অনুসারে, সম্পত্তিগুলির মধ্যে ৮,৭২,৩৫২টি স্থাবর সম্পদ এবং ১৬,৭১৩টি অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন:বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের প্রেরণা, সম্প্রীতির প্রতীক: ইমরান
সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য ভারত জুড়ে ওয়াকফ সম্পত্তির রাজ্যভিত্তিক বন্টনকেও তুলে ধরা হয়েছে । গুজরাত উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে ওয়াকফ সম্পত্তির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, গুজরাতেই ৩৯,৯৪০টি স্থাবর সম্পত্তি এবং ৫৪১৮টি অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে৷ উত্তরপ্রদেশ (সুন্নি) ২১৭,১৬১টি স্থাবর সম্পত্তি,কেরালা এবং কর্ণাটকও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যথাক্রমে ৫৩২৯৭ এবং ৬২,৮৩০টি স্থাবর সম্পত্তি আছে ।জম্মু ও কাশ্মীরে ৩২৫৩৩টি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এবং ১০টি সম্পত্তি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, এবং মহারাষ্ট্রে স্থাবর সম্পত্তি হাজারের মধ্যে বলে রিপোর্ট করা হয়েছে, যার মধ্যে কিছু কিছু অস্থাবর সম্পত্তিও রয়েছে। সরকার এই সমস্যাটি মোকাবেলা করার জন্য পদক্ষেপের রূপরেখা দিয়েছে।
ওয়াকফ বোর্ডগুলিকে বিচ্ছিন্ন সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যদি কোন সম্পত্তি বেআইনিভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে পাওয়া যায়, তাহলে বোর্ড স্থানীয় কালেক্টরের কাছে একটি অনুরোধ পাঠাতে পারে দখল নিতে এবং বোর্ডের কাছে সম্পত্তি ফেরত দিতে। এই ব্যবস্থাগুলি ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার চলমান প্রচেষ্টার অংশ, যা ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কল্যাণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সারা দেশে ওয়াকফ সম্পত্তির মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭২৩৫২।
এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনও বিচ্ছিন্ন, বেদখল এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সরকার সক্রিয়ভাবে এই সম্পত্তি পুনরুদ্ধার এবং তাদের সুরক্ষা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য কাজ করছে। এই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু দপ্তর। ওয়াকফ আইনে তৃতীয় সংশোধনী করতে দুটি বিল এনেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। ওয়াকফ বিল ১৯৫৪ বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং এর জায়গায় একটি নতুন বিল আনা হয়েছে। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনটিও সংশোধন করা হচ্ছে। মোদি সরকার এই ওয়াকফ সংশোধনী বিলের মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়া সীমাহীন ক্ষমতা রোধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওয়াকফ অর্থ আল্লাহর নামে জমি, অর্থাৎ যে সব জমি কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে নয়, বরং মুসলিম সমাজের অন্তর্গত সেগুলোই ওয়াকফ জমি। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, ঈদগাহ, মাযার ইত্যাদি। কিন্তু দেখা গিয়েছে, এ ধরনের জমির অপব্যবহার এমনকী বিক্রিও হচ্ছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের জমি নিয়ন্ত্রণের জন্য ওয়াকফ বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল। ওয়াকফ জমির ব্যবহার বন্ধ করতে এবং অবৈধ উপায়ে জমি বিক্রি হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য ওয়াকফ বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল।