ওয়াশিংটন: দায়িত্ব গ্রহণের দিনই তিন দেশের ওপর বড় ধরনের ট্যাক্স আরোপের হুঁশিয়ারি দিলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশগুলো হল যথাক্রমে মেক্সিকো, কানাডা ও চিন। এদের মধ্যে মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চিনা পণ্যের ওপর “অতিরিক্ত” ১০ শতাংশ ট্যাক্স (শুল্ক) আরোপ করা হবে বলেই জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ সীমান্ত পারাপার ও মাদক চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে। অবৈধ অভিবাসী এবং মাদক পাচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই শুল্ক নীতি বহাল রাখার কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে চিনা পণ্য আমদানিতে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি শুল্ক আরোপ ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা যানবাহনের ওপর ১,০০০ শতাংশ বা তার বেশি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
ঘটনা প্রসঙ্গে চিনের প্রতিনিধিরা ট্রাম্পকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা মাদক পাচারকারী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করবে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ ট্রাম্পের। তিনি বলেছেন, সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান না করে তারা মেক্সিকো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চালান করছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অটোয়া ও বেইজিং। কানাডার উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে-বিশেষ করে বাণিজ্য ও সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ সম্পর্ক বেশ গুরুত্বপূর্ণ’। ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতি বৈশ্বিক বাজারে খারাপ প্রভাব ফেলবে। ট্রাম্পের কর নীতি প্রসঙ্গে চিনের এক রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেছেন যে, বাণিজ্য যুদ্ধে কোনো পক্ষই সফল হতে পারে না। চিনের ওপর মার্কিন শুল্ক ইস্যুতে বেইজিং বিশ্বাস করে যে, চিন-মার্কিন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা প্রকৃতিগতভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতি বৈশ্বিক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
প্রসঙ্গত, এদিন সোশ্যাল সাইটে পোস্ট করে ট্রাম্প বলেন, ‘২০ জানুয়ারি অফিসে ঢুকেই বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে সই করব। তার মধ্যে অন্যতম কানাডা, মেক্সিকো ও চিন নিয়ে আমার সিদ্ধান্ত। ওই তিন দেশ থেকে যেসব পণ্য আসবে, তার ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে।’ চিন থেকে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে বিপুল অবৈধ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে। চিনকে এ বিষয়ে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য চিনের ওপর আরও ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বেইজিংকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হলেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি তারা। এবার ফল ভোগ করতে হবে। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে বসতে যাচ্ছেন। শুরু হবে তার নতুন সরকারের পথচলা।