পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রে গেরুয়া ঝড়ে পর্যদুস্ত বিরোধী জোট। বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে বাণিজ্য রাজধানীর দখল নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাজুটি। মারাঠাভূমের বাতাসে একটাই কথা এখন গুঞ্জরিছে ‘‘কে প্রকৃত শিবসেনা? আজ প্রমাণ হয়েই গেল…।’ গেরুয়া শিবিরের ভূমিকম্প ধরানো ফলাফলে ইতিমধ্যেই ষড়যন্ত্রের ছোঁয়া মেহেসুসের কথা জানিয়েছেন সঞ্জয় রাউত । এবার ক্ষোভ উগড়ালেন উদ্ধব ঠাকরে। সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ক্রমশই ‘এক দেশ, এক দলের’ দিকে অগ্রসর হচ্ছে ভারত। লোকসভা ভোটের মাত্র ৪ থেকে ৬ মাসের ব্যবধানে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এরই মধ্যে কিসের থেকে কী হয়ে গেল। বিশ্বাস হচ্ছে না আমাদের রাজ্যের মানুষ এমন রায় দিতে পারেন৷
সঞ্জয় রাউতের ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতের ছোঁয়ায় হাত বুলিয়ে তিনি আরও বলেন, নিঃসন্দেহে মহাজুটির এই ফলাফল ‘ঢেউ’ নয় , ‘সুনামি’। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না ওরা কী করল যে এমন ফলাফল পেল। কীভাবে চার মাসে এত পরিবর্তন হল? কোভিডের সময় এরাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল, তাদের পরিবারের প্রধান হিসাবে আমার কথা শুনেছিল, সেই রাজ্যই এমন করল? বিশ্বাস হচ্ছে না। রাজ্যে কৃষকরা কষ্ট পাচ্ছে, বেকারত্ব বাড়ছে। জনগণ ওদের বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি এমন ম্যাজিক করল যে , এই সুনামি হল? আমার মনে হয় না ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ স্লোগান কাজ করেছে। এই রাজ্যে ধর্মীয় মেরুকরণের কোনও জায়গা নেই।
তবে এই জিতের জন্য আমি ওদের অভিনন্দন জানাই এবং আশা রাখি যে লড়কি-বেহেন যোজনা যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচনের জুমলা না হয়ে থাকে। আশা করি কৃষকদের ঋণ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং যাবতীয় প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মাস চারেক আগে লোকসভার ফলপ্রকাশের পর বিজেপি যেখানে ধাক্কা সামলাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, সেখানে আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল বিরোধী শিবির। লোকসভার ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে লাডলি বহিন, টোল ট্যাক্সে ছাড়, ইলেকট্রিক বিলে ছাড়ের মতো রেউড়ি সংস্কৃতি শুরু করে মহাজুটির সরকার। জোর দেয় সাংগঠনিক কাজে। স্রেফ দলিত ভোট এককাট্টা করতে রাজ্যে ৬০ হাজারের বেশি কর্মসূচি নিয়েছিল আরএসএস। মারাঠা সংরক্ষণ ইস্যুর চাপ সামলাতে ওবিসিদের একত্রিত করার কাজও নীরবে করে গিয়েছে আরএসএস-বিজেপি। যার ফলস্বরূপ এই ভূমিকম্প ধরানো অপ্রত্যাশিত ফলাফল।