পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: সাধারণের পাশে সাধারণেরাই। এই কথা আবার প্রমাণ করল বাসুদেবপুর হিউম্যান আল্যায়েন্স কালচারাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। সংক্ষেপে হ্যাক ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। করোনা সংকট থেকে শুরু করে ইয়াস বিপর্যয় মোকাবিলায় মানুষের পাশে কাজ করে চলেছেন এই সোসাইটির প্রায় শ’খানেক কর্মী।
হ্যাক ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র জেনারেল সেক্রেটারি হাসিবুর রহমান জানান, বর্তমান সংকটের সময় কোভিড নিয়ে কাজ চলেছে। আমাদের প্রধান কার্যালয় উলুবেড়িয়া। গোটা হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরে ব্যাপক এলাকাজুড়ে কাজ চলার পাশাপাশি রাজ্যেব্যাপি অক্সিজেন সরবরাহের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ৩০০ ইউনিট অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে। চলছে বিনামূল্যে ওষুধ পরিষেবার কাজও। এছাড়া যে সমস্ত রোগীরা করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে রয়েছেন, তাদেরও আমরা খেয়াল রাখছি।
এছাড়াও কিছুদিন আগেই ইয়াসে বিধ্বস্ত শ্যামপুর মায়াচরে ১৫০ জন পরিবারের হাতে আমরা খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছি। তার মধ্যে ছিল শুকনো খাবার সমেত চাল, ডাল, নুন, তেল। রান্না করা খাবারও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে ঘুর্ণিঝড়ে রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে রাস্তাঘাট ধসে পড়ায় অনেকে খাবার নিতে আসতে পারেনি। ফলে সেইসব রান্না করা খাবার মায়াচর কমিউনিটি কিচেনের আমরা তুলে দিয়েছি। তবে শুকনো খাবার আমরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। এই কাজ এখন আমাদের চলবে।
হাসিবুরসাহেব জানান, সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করব, এই চিন্তা ভাবনা নিয়ে ২০১৫ সালে আমরা কাজ শুরু করি। প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষা বিস্তার। আমাদের ইনস্টিটিউট আছে, যার নাম ‘হ্যাক ইনস্টিটিউট অ্যান্ড টেকনোলজি।’ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে দুঃস্থ পরিবার থেকে আসা ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মূলত বিনামূল্যেই পড়াশোনা হয়। কো- এডুকেশন স্কুল। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনার সমস্ত খরচ স্টাডি মেটেরিয়াল তাদের দেওয়া হয়। উলুবেড়িয়াতেই এই স্কুল। কোভিডের সময়েও স্কুলের পাশে থেকে তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হয়েছে। নিজেদের স্কুলের পড়ুয়া ছাড়াও আশেপাশের এলাকার প্রায় হাজার জন ছাত্রীকেও বই, খাতা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে।
হাসিবুর রহমান আরও বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় বড় হয়ে ওঠার সুবাদে দেখতাম গরীব পরিবারের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আর্থিক অনটনের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে জরির কাজ করতে হয়। তাদের শিক্ষা আলোয় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েই আমাদের এই কাজ শুরু। ভবিষ্যতে আমাদের পরিকল্পনা আছে, এদের স্বনির্ভর করে তোলা। কোনও সরকারি অনুদান নয়, চাকরি থেকে সঞ্চিত অর্থ জমিয়ে আমাদের এই উদ্যোগ।