রমিত বন্দ্যোপাধ্যায়: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বদ্ধ পরিমণ্ডল থেকে বেরিয়ে রবীন্দ্রসদনের একতারা মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘ক্লাসিকাল মিউজিক কনফারেন্স-২০২৪’। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগে বিপুল সংখ্যক সংস্কৃতি প্রেমী মানুষদের পাশে পাওয়া গেল। এই অনুষ্ঠানে নবীন ও প্রবীণ দুই প্রজন্মেরই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন। এ বছরের এই অনুষ্ঠান প্রখ্যাত তবলা বাদক প্রয়াত হীরেন্দ্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করা হয়।
একতারা মঞ্চের আরেকদিকে নির্মিত হয় “বাংলার রাগসঙ্গীত” শীর্ষক এক প্রদর্শনী কক্ষ। এই প্রদর্শনী কক্ষে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পীদের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হয়। মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। ১৯ থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি আয়োজিত এই ক্লাসিকাল মিউজিক কনফারেন্স ২০২৪।
উদ্বোধনের দিন উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, সংগীতশিল্পী শিবাজী চট্টোপাধ্যায় , পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী , পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস নৃত্যগুরু অমিতা দত্ত , তথ্য–সংস্কৃতি দফতরের অধিকর্তা কৌশিক বসাক সহ প্রমুখ।
তিন দিনব্যাপী এই সংগীতানুষ্ঠানে যে সকল গুণী শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন তাদের সংগীত পরিবেশনায় মুগ্ধ হন শ্রোতারা। এক সংগীতপ্রেমী জানান , “রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গন হল সংস্কৃতি প্রেমীদের মিলনস্থান।এত কাছ থেকে এই প্রথিতযশা শিল্পীদের শোনার অভিজ্ঞতা খুবই মধুর। শাস্ত্রীয় সংগীতের চর্চা আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত তাই নতুন প্রজন্মের এই সাংকৃতিক ধারার সঙ্গে পরিচিতি হওয়াটা খুবই প্রয়েজনীয় ”
মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন জানান, সকলের সম্মতি থাকলে আমাদের এই ক্লাসিকাল মিউজিক কনফারেন্স পরের বছর থেকে ক্লাসিকাল মিউজিক উৎসবে পরিণত করার চেষ্টা করা হবে। আমরা এই বাংলার মানুষেরা বিশ্বাস করি ধর্ম আমার, ধর্ম তোমার, উৎসব সবার। ৭০ দশকের শেষ থেকে পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস, পণ্ডিত তন্ময় বোস, আচার্য জয়ন্ত বোস, পণ্ডিত কুমার বোস , পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ , পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের মতো আরও বেশ কিছু গুণী মানুষদের গানবাজনা শুনে বড় হয়েছি এবং সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছি। আমি নিজের বন্ধুবান্ধবের থেকে অর্থ জোগাড় করে ব্যক্তিগতভাবে এঁদের অনুষ্ঠান আয়োজন করতাম।তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান ছিল আচার্য জয়ন্ত বোসের সাথে পণ্ডিত কুমার বোসের তবলা । আজও সেই দিনগুলোর কথা মনে পরে।
ইন্দ্রনীল সেন বলেন, এখন আমি সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে থেকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পূর্ণ সমর্থনে এই ধরণের অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারছি। শিল্পীদের কাছে অক্সিজেন হল পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ আর এই অনুষ্ঠানে সমাজের সর্বস্তরের সংস্কৃতিসম্পন্ন মানুষের উপস্থিতি নতুন প্রজন্মকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত চর্চার প্রতি আরও উৎসাহিত করবে।”
পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস জানান, আমাদের খুব ইচ্ছা এই ক্লাসিকাল প্রোগামেও একটা দিন আসবে যেদিন সমগ্র দর্শকাসন পূর্ণ হবে।সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীকূল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, যাঁর স্বপ্ন সাংকৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলার, তাঁকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাকে রূপায়ণের জন্যে আমাদের বন্ধু, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে ধন্যবাদ জানাই।