লখনউ, ২৯ আগস্ট: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে নারী নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সোচ্চার সাধারণ মানুষ। ধর্ষণের শাস্তিতে ফাঁসি চেয়ে উত্তাল গোটা দেশ। নারী নির্যাতনের ঘটনায় বার বার বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি পশ্চিমবঙ্গের দিকে নৈরাজ্যের আঙুল তুলেছে। কিন্তু যত সময় পার হয়েছে ততই গেরুয়া নেতৃত্বাধীন রাজ্যগুলিতে অরাজকতার চিত্র সামনে এসেছে। বিজেপিশাসিত রাজস্থানের যোধপুরের একটি হাসপাতালে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের খবর প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই ফের উত্তরপ্রদেশ একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী থাকল। স্ত্রীকে খুন করে মুণ্ডু ধড় থেকে আলাদা করে দিল স্বামী। দেহাংশ কুচি কুচি করে কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই খুনের ছক কষা হয়েছিল। খুনের জন্য বাজার থেকে অভিযুক্ত মাংস কাটার ছুরি (ক্লিভার) ও বৈদ্যুতিক করাত কিনেছিল। ১ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটায় অভিযুক্ত স্বামী। খুনের যাবতীয় তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে দেহাংশ কুচি কুচি করে কেটে কিছুটা নদীতে বাকি অন্যত্র ফেলে দেয়। খুনের তদন্ত করতে গিয়ে কালঘাম ছুটে যায় পুলিশের। অবশেষে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দম্পতি রানি বাজারের বাসিন্দা। ৪৫ বছরের শঙ্করের সঙ্গে নীতু ওরফের গুড়িয়ার (৪১) প্রায়শই ঝগড়া লেগেই থাকত আর্থিক কারণে। গত ৩০ জুলাই স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে সেই আর্থিক কারণে অশান্তি হয়। ১ আগস্ট খুন। তার পর শঙ্কর নৃশংসভাবে নীতুর মাথা আলাদা করে দেহের ছোট ছোট টুকরো করে। পরে উত্তরপ্রদেশে সরযূ নদীতে কাটা মুণ্ডু ফেলে দেয় সে, দেহের অন্যান্য অংশ আজব নগর গ্রামের আশেপাশের ঝোপ ঝাড়ে ফেলা হয়। ধৃতের নাম শঙ্কর দয়াল গুপ্তা। স্ত্রী নীতু পাণ্ডে হত্যার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার পুলিশ সুপার বিকাশ কুমার জানান, নীতুকে খুনের পর তার মাথা ধড় থেকে আলাদা করে গত ৩ আগস্ট সরযূ নদীতে ফেলে দেয় শঙ্কর, বাকি অংশ কয়েকটি টুকরো করে দুটি ব্যাগে রেখে ৬ আগস্ট গোন্ডায় ফেরার আগে আজব নগর গ্রামের কাছে ঝোপে ফেলে দেয় সে। পরের দিন দেহের বাকি অযোধ্যার নয়া সেতুর উপর থেকে সরযূ নদীতে ফেলে। গত ৬ আগস্ট আগ্রাওয়া মোড়ে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে বাইকে করে একটি সাদা ব্যাগ নিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখে খুনের কিনারা করে পুলিশ।
বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতেই প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ তদন্তে এসে দেখে শঙ্কর গুপ্তার বাড়ির দরজা বন্ধ। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ১৫টি জেলার পাঁচশো নিখোঁজ মামলা সহ কমপক্ষে তিনশো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে হয়েছে। পুলিশ খুনের ব্যবহৃত মাংস কাটার ছুরি সহ একটি বৈদ্যুতিক করাত বাজেয়াপ্ত করেছে। মামলার পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং বিষয়টি দ্রুত ফার্স্ট ট্র্যাক আদালতে পাঠানো হবে।