পুবের কলম,ওয়েব
ডেস্কঃ শিয়রে ভোট। তার আগে গরুকে ‘রাজ্যমাতা’-র স্বীকৃতি দিল মহারাষ্ট্র এনডিএ
সরকার। তবে সব গরুর কপালে এই স্বীকৃতির শিকে ছেঁড়েনি। শুধুমাত্র দেশি গরুর
ক্ষেত্রেই এই সম্মান প্রযোজ্য। চলতি বছরেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে
এই স্বীকৃতিকে ‘ভোট রাজনীতি’ বলেই মনে করছেন অনেকে।
হিন্দু ভাবাবেগে চিরকালই
আলাদা মর্যাদা পেয়ে এসেছে গরু। হিন্দু ধর্মে মায়ের মর্যাদায় পূজা করা হয়। যার
ফলে ভোট বাজারে গো-আবেগ ম্যাজিকের মত কাজ করে। কিন্তু তারই পাশাপাশি বিজেপি
শাসনাধীনে দেশের নানাপ্রান্তে এই উপকারী প্রাণীকে ঘিরে বিভেদ বিদ্বেষ এবং হত্যার ছবিও
সামনে এসেছে।
সোমবার একনাথ
শিণ্ডের নেতৃত্বাধীন সরকার এক সরকারি আদেশ জারি করে এই স্বীকৃতির কথা ঘোষণা করে।
দেশের মধ্যে প্রথম কোনও রাজ্য গরু নিয়ে এইধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করলো। আদেশে, ভারতীয়
ঐতিহ্যে গরুর সাংস্কৃতিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছে সরকার।
রাজ্য সরকার
জানিয়েছে, গরু ভারতীয় ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং অনাদিকাল থেকেই
আধ্যাত্মিক, বৈজ্ঞানিক
এবং সামরিক তাৎপর্য রাখে।
ভারত জুড়ে পাওয়া
গরুর বিভিন্ন জাতের হাইলাইট করে, মহারাষ্ট্র সরকারও দেশি গরুর সংখ্যা হ্রাস নিয়ে উদ্বেগ
প্রকাশ করেছে। সরকারি আদেশে, সরকার কৃষিতে গোবর ব্যবহারের উপরও জোর দিয়েছে যার মাধ্যমে
মানুষ প্রধান খাদ্যে পুষ্টি পায়।
গরু এবং এর পণ্য
সম্পর্কিত আর্থ-সামাজিক কারণগুলির পাশাপাশি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বিবেচনা
করে,
সরকার গবাদি পশু পালনকারীদের দেশী গরু পালনে উৎসাহিত করে।
উল্লেখ্য, লোকসভা
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে মহারাষ্ট্রে এনডিএ জোটের অবস্থা ভালো নয়। বিধানসভা
নির্বাচনে ঘটি উল্টে যেতে পারে- বিরোধীদের এই দাবি যে অমূলক নয় তা ভালো করেই জানে
শাসক শিবির। তাই কী গরুতেই আস্থা রাখল এনডিএ?
রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ,
হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য গরু নিয়ে বিজেপির ব্যাপক মাতামাতি রয়েছে। তবে মহারাষ্ট্রের
পরিস্থিতি তেমন নয়। গো বলয়ের সেইসব রাজ্যে গরু ভোটের বাজার গরমের জন্য ব্যবহৃত
হলেও এমন সরকারি আভিজাত্য পায় নি। যে রাজ্যে মুম্বাইয়ের মতো দেশের বাণিজ্য নগরী
আছে, সেখানে গরুকে গোয়াল ঘর থেকে সরাসরি রাজ্যমাতার স্বীকৃতিতে হতবাক অনেকেই।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, ক্ষমতা ধরে রাখতে শিন্ডে কতখানি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এই ঘটনা
সেটাই প্রমাণ করে।