প্যারিস, ২৯ আগস্টঃ টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দুরভের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত চলাকালে তার ফ্রান্স ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে। তাই তাকে বিচারবিভাগীয় তত্ত্বাবধানে রাখা যায়।
দুরভ রাশিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক। তাকে জামিনের জন্য ৫০ লাখ ইউরো জমা এবং সপ্তাহে দুইবার থানায় হাজিরা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দিয়ে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, দুরভ তার বিরুদ্ধে আনা অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন না। তার বিরুদ্ধে মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। দুরভের আইনজীবী ডেভিড অলিভিয়ার কামিনস্কি ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, একটি সামাজিক নেটওয়ার্কের দায়িত্বে থাকা মানুষের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অবিশ্বাস্য। কারণ, এ ধরনের কাজের সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নন। আর সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ পর্যায়ে দুরভ এ মামলায় একমাত্র জড়িত ব্যক্তি।
৩৯ বছর বয়সী দুরভকে প্যারিস বিমানবন্দর থেকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম মাদক পাচার, জালিয়াতি, বাচ্চাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারের পর তাকে ৯৬ ঘণ্টার পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফরাসি আইন অনুসারে, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের আগে সর্বোচ্চ ৯৬ ঘণ্টা তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা যায়।
এদিকে, দুরভের গ্রেপ্তারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছে রাশিয়া। এ ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলির দ্বিচারিতা সামনে নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ কর্মকর্তারা। তবে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক কারণে দুরভকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, এটা স্বাধীনভাবে করা তদন্তের অংশ।’
ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশনের সাইবার সিকিউরিটির ডিরেক্টর ইভা গালপেরিন জানান, দুরভের গ্রেপ্তারি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত কিনা, তা বলার সময় এখনও আসেনি। টেলিগ্রামের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ আছে, তবে কেউই নির্দিষ্ট করে কোনও অভিযোগ করেনি।