পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার আমার নেই, ফুটপাতে দখলদার উচ্ছেদের আবহে নবান্নের বৈঠক থেকে ফের কড়া বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, আমি কলকাতাকে সুন্দর করতে চাই। তাই আপনাদের সেই বুঝে কাজ করতে হবে। আপতত উচ্ছেদ হবে না। তার মধ্যে আমাদের সার্ভের কাজ চলবে। এর মধ্যেই সব ঠিক করে নিতে হবে। হকারদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, দোষ সব আমাদের। আমরা নিউ মার্কেট এলাকায় একটা বিল্ডিং বানিয়ে দিচ্ছি না কেন? যেখানে ওরা বসবে। এটা আমাদেরই করতে হবে। হকাররা সেখানে থাকবেন।
মিড ডে মিলের রান্নার গ্যাসের পাইপ ফেটে আগুন হাওড়ার স্কুলে, জখম ২ শিক্ষিকা
কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে নিখোঁজ বাংলাদেশি যুবক
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই তৎপর পুলিশ, ধৃত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য
মমতা বললেন, পুরো ব্যাপারটার একটা সৌন্দর্য্য বজায় রাখতে হবে। আগুন লাগবে না এমন জিনিস দিয়ে স্টল বানাতে হবে। প্রতিটি স্টলের নম্বর থাকবে। এক এক জন হকার এক একটি স্টল পাবেন।
গ্র্যান্ডের সামনে হকার বসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমাদের নিরাপত্তার দিকটা দেখতে হবে। কারণ দেশ-বিদেশের তারকা, অভিনেতারা এখানে এসে থাকেন। হঠাৎ করে যদি কোনও গন্ডোগোল হয়ে যায়। তাই যাঁরা বলছেন, গ্র্যান্ডের সামনেই বসতে দিতে হবে, তাঁদের বিষয়টা বুঝতে হবে।
পুলিশকে অনেক শক্ত হতে হবে, পুলিশ যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে সামাজিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। তাই পুলিশকে অনেক কড়া হতে হবে। কোন দলের লোক দেখার দরকার নেই।
একজন হকারের চারটে ডালা এসব বরদাস্ত করা হবে না। কাউন্সিলার সব জেনে শুনে ঘুমোচ্ছে এসব চলবে না। যে এলাকায় বেআইনি দখল হবে সেখানকার কাউন্সিলরদের গ্রেফতার করা হবে। যত বড়ই নেতা হোক না কেনো, তাঁকে ছাড়া হবে না। তবে একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, ভালো কাজ হলে পুরস্কৃতও করা হবে।
পুলিশের উদ্দেশে মমতা আরও বলেন, পুলিশের লোভ বেড়ে গেছে। গরিব হকারদের থেকে চাঁদা নিচ্ছে। লোভ সংম্বরণ করতে হবে। যে পুলিশ এই সমস্থ কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেবে তাকে সরিয়ে দেবো। জীবনধারণের জন্য যেটুকু দরকার, সেটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকুন। কিন্তু তা হচ্ছে না।
এলাকার নেতারা প্রথমে ডালা নিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে, পরে বুলডোজার এনে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। নিজেরাই বসাবেন, তার পরে বুলডোজার চালাবেন, তা হবে না।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, আমি হকারদের খুব ভালোবাসি। কারণ মানুষ রাস্তায় কোনও বিপদে আপদে পড়লে ওরাই আগে এগিয়ে যায়। রাস্তায় কোনও মেয়ের সঙ্গে কেউ অশালীন আচরণ করলে ওরাই আগে এগিয়ে যায়।
তাই বলব কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার আমার নেই। শপিং মলে, বড় বড় দোকালগুলিতে অনেক দামের কারণে মানুষ হকারদের কাছে যায়। আমি মনে করি হকাররা সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ডের জিনিস বিক্রি করে, কেন জানেন, কারণ হকাররা লোকাল ব্র্যান্ডের সামগ্রী বিক্রি করে।
শুধু কলকাতা নয়, আশেপাশে সমস্ত মিলিয়ে কত হকার আছে, তার তালিকা চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে রাজ্যের যে সমস্ত বড় বড় বাজার রয়েছে, সেই সমস্ত বাজার এলাকার প্ল্যান চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে জানালেন বাজার এলাকার খুব কাছেই অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিপজ্জনক বাড়ি কেনার জন্য তহবিল গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে।