তেল আবিব, ২ জুলাই: লেবাননের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের ব্যাপারে ইসরাইলকে সতর্ক করে একটি ইসরাইলি পত্রিকা বলেছে, ‘হিজবুল্লাহর সঙ্গে ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধ হলে ইসরাইল নিশ্চিতভাবে পরাজিত হবে’। আল-আকসা তুফান অভিযান শুরুর পর লেবাননের প্রতিরোধ বাহিনী হিজবুল্লাহ ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে হামলা শুরু করে। এই হামলার ফলে উত্তর ইসরাইলের অধিবাসীরা তাদের ঘরবাড়ি ফেলে দক্ষিণে পালিয়ে যায়। ক্রমাগত লেবাননের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরাইলি বাহিনী অসহায় হয়ে পড়ে যা নেতানিয়াহু সরকারের চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে। ইসরাইল থেকে প্রকাশিত দৈনিক হারেৎজ ‘লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধের ফলাফল সম্পূর্ণ পরাজয়’ শিরোনামের এক সংবাদ বিশ্লেষণে লিখেছে, লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলে বিশেষ করে দেশটির বিরুদ্ধে স্থল অভিযান চালালে ভয়াবহ পরাজয়ের সম্মুখীন হবে ইসরাইল।’ লেবাননে হামলা চালিয়ে মূলত দক্ষিণ লেবানন দখল করতে চায় ইসরাইল। এর মাধ্যমে তেল আবিব দক্ষিণ লেবানন থেকে হিজবুল্লাহকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু দৈনিক হারেৎজ লিখেছে, ইসরাইলি বাহিনীর এই কাজ করার সামর্থ্য নেই। পত্রিকাটির সংবাদ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরাইলের পক্ষে লিতানি নদী পর্যন্ত দক্ষিণ লেবানন দখল করা সম্ভব নয়। ইসরাইলি সেনারা বড়জোর যেটি করতে পারে সেটি হচ্ছে, সীমান্তে সীমিত আকারে এতটুকু অভিযান পরিচালনা করা যাতে উত্তর ইসরাইল থেকে যারা দক্ষিণ দিকে পালিয়ে গেছে তারা তাদের ঘরবাড়িতে ফিরতে নিরাপদ বোধ করে। লেবানন সীমান্তবর্তী পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত জটিল’ উল্লেখ করে যায়নবাদী পত্রিকাটি লিখেছে, ‘সীমিত পর্যায়ের অভিযানের ফলেও উত্তেজনা বেড়ে যেতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’ পত্রিকাটি বলছে, ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপের যে জবাব হিজবুল্লাহ দেবে তাতে যুদ্ধ আর অল্প পর্যায়ে সীমিত থাকবে না বরং ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে ইসরাইলের কৌশলগত অবকাঠামোতে হিজবুল্লাহর হামলা হবে এবং যুদ্ধের প্রথম ধাক্কায় ইসরাইলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এদিকে আরেক ইসরাইলি দৈনিক ইয়াদিওত আহারোনোত লিখেছে, লেবাননের হিজবুল্লাহর কাছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক সরঞ্জাম ও অত্যন্ত বিপজ্জনক সামরিক প্রযুক্তি রয়েছে। লেবানন সীমান্ত দিয়ে ইসরাইলে নির্বিঘ্নে শত শত ড্রোনের ঢুকে পড়ার ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব ড্রোন মোকাবিলা করতে সক্ষম নয়।  হিজবুল্লাহর এই হুমকি মোকাবিলা করার উপায় খুঁজে বের করার জন্য ইসরাইলি বাহিনী মরিয়া হয়ে উঠেছে।