ঢাকা, ১০ আগস্ট: কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদ রংপুরের আবু সাঈদের করব জিয়ারত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার সকালে হেলিকপ্টারে করে পীরগঞ্জে অবস্থিত রংপুর মেরিন অ্যাকাডেমিতে পৌঁছান তিনি। এরপর ৩ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আবু সাঈদের বাড়ি বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে পৌঁছান। সেখানে আবু সাঈদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান ইউনূস। শহিদ ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই অন্যতম উপদেষ্টা তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পীরগঞ্জে আগমন উপলক্ষে পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল। সেনা ও বিজিবির সদস্যরা কঠোর পাহারায় ছিলেন। পুরো এলাকায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আবু সাঈদের কথা স্মরণ করে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি বলেন, ‘আজকে আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে আমাদের। যে আবু সাঈদের ছবি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁথে আছে। এটা কেউ ভুলতে পারবে না! কী অবিশ্বাস্য একটা সাহসী যুবক! বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে! তারপর থেকে কোনও যুবক আর হার মানেনি, গুলির সামনে এগিয়ে গেছে। বলেছে—যত গুলি মারতে পারো মারো, আমরা আছি। যার কারণে সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে এবং বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছে।’ আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের পুত্র। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু। ১৭ জুলাই বাবনপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয় তাঁকে। এদিকে, বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে দায়িত্বগ্রহণের পর মুহাম্মদ ইউনূসকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘নোবেলজয়ী ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় আমি তাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তাঁর অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা জাতিকে ঠিক পথে পরিচালিত করবে।’