Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

সূরা ফাতিহার মর্যাদা ও ফযিলত

Puber Kalom

Puber Kalom

Published: 03 June, 2024, 03:07 PM
সূরা ফাতিহার মর্যাদা ও ফযিলত

মুফতি সালেহ আহমদ: সূরা আল ফাতিহা পবিত্র কুরআনের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সূরা। প্রথমত, এই সূরা দ্বারাই পবিত্র কুরআন শুরু হয়েছে এবং এই সূরা দিয়েই আমাদের নামায শুরু করতে হয়।

অবতীর্ণ হওয়ার দিক দিয়েও পূর্ণাঙ্গরূপে এটিই প্রথম নাযিল হয়। সূরা ইকরা,  সূরা মুয্যাম্মিল ও সূরা মুদ্দাসসির-এর কয়েকটি আয়াত অবশ্য সূরা আল ফাতিহার আগে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু পূর্ণ সূরারূপে ফাতিহাই সর্বপ্রথম। অসংখ্য সাহাবী-কর্তৃক বর্ণিত যে, এই সূরাই সর্বপ্রথম সূরা; আর এই কারণেই এ সূরার ফায়দা ও উপকারিতা এবং বৈশিষ্ট্যের প্রতি লক্ষ করে এর বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হল—

 

১. আল ফাতিহা: যেহেতু এ সূরা দিয়ে পবিত্র কুরআন শুরু হয়েছে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত নামায এই সূরা দিয়ে শুরু হয়। তাই সূরার নাম ‘সূরাতুল ফাতিহা’।

 

২. উম্মুল কিতাব: ‘পূর্ণ কুরআনের আলোচ্য বিষয় তথা সারসংক্ষেপ এই সূরার মধ্যে নিহিত বিধায় এই সূরার নাম ‘উম্মুল কুরআন’ রাখা হয়েছে।

 

৩. আশ শাফিয়া: যেহেতু এ সূরা দ্বারা সব রোগের চিকিৎসা করা হয়, তাই এর একটি নাম হল ‘সূরাতুশ শাফিয়া’। হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূল সা. বলেছেন, ‘সূরা ফাতিহা সব রোগের ওষুধ।’

 

এছাড়াও এই সূরার আরও কিছু নাম, আল ওয়াফিয়া, আল কাফিয়া, আল আসাস,  আল হামদ, আদদুয়া। সূরা ফাতিহা এদিক দিয়ে সমগ্র কুরআনের সারসংক্ষেপ। এই সূরায় সমগ্র কুরআনের সারমর্ম সংক্ষিপ্তাকারে বলে দেওয়া হয়েছে। কুরআনের অন্য সূরাগুলো প্রকারান্তরে সূরা ফাতিহারই বিস্তৃত ব্যাখ্যা। কারণ সমগ্র কুরআন প্রধানত ঈমান এবং নেক আমলের আলোচনাতেই কেন্দ্রীভূত। আর এ দু’টি বিষয়েই সূরা ফাতিহায় আলোচনা করা হয়েছে।

 

আর এই সূরা কুরআনুল কারিমের শুরুতে আনার আরও একটি কারণ হল, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতকারী তার অতীতের সব ভুল ধারণা থেকে মুক্ত হয়ে প্রথমে মহান আল্লাহর সঙ্গে কথা বলবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে যে, তিনি যেন তা  কে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ দান করেন। সর্বপ্রকার গোমরাহি ও ভ্রান্ত মতবাদ  থেকে মুক্ত করে তাঁর প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করেন এবং দুনিয়া ও  আখেরাতে সফলতা দান করেন, যা একজন মানুষের জীবনের চরম ও পরম পাওয়া।হযরত উবাই ইবনে কাব রা. একবার রাসূল সা.-এর কাছে সূরা ফাতিহা পড়লেন, যা শুনে রাসূল

 

সা. বললেন: ‘ওই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাওরাত, ইনজিল, জাবুর, এমনকি কুরআনেও এর মতো মর্যাদাশীল অন্য কোনও সূরা নেই।’ (মুসনাদে আহমদ)

 

হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আসমান থেকে একজন ফেরেশতা রাসূলুল্লাহ্ সা.-এর কাছে এসে বললেন, ‘আপনি দুটি নূরের সুসংবাদ  গ্রহণ করুন, যে দু’টি আপনাকে দেওয়া হয়েছে, যা আপনার আগে কোনও নবীকে দেওয়া হয়নি। সে দুটি হ’ল- সূরা ফাতিহা ও সূরা বাকারাহর শেষ তিন  আয়াত। যার প্রতিটি হরফের বিনিময়ে অফুরন্ত নিয়ামত ও নেকি দেওয়া হয়।’

 

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন, ‘সূরা ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ওষুধ বিশেষ। মূলত সূরাতুল  ফাতিহা হল এমন এক মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী সূরা, যা শুধু উম্মতে মুহাম্মাদির জন্যই দান করা হয়েছে।

Leave a comment