উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর : পুজোর আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিনই বাকি, আর তাই নিজেদের বাদ্যযন্ত্র ঝালিয়ে নিচ্ছে বাদ্য কাররা। ঢাকি পাড়া গুলিতে এখন চরম ব্যস্ততার ছবি উঠে আসছে। অপেক্ষার অবসান প্রায় শেষ হতে চলেছে দীর্ঘ এক বছরের প্রতীক্ষার অবসান। উমা আসছে সপরিবারে বাপের বাড়িতে। দুর্গাপূজো মানে ঢাকের তাল আর ধুনুচি নাচ। এক বছর ধরে পূজোর এই পাঁচটা দিনের অপেক্ষা করে থাকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢাকি পাড়ার বাদ্য কাররা।সারা বছর বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পুজোর পাঁচটা দিন ডাক পড়ে তাদের। পরিবার স্বজনকে ছেড়ে লক্ষ্মী লাভের আশায় রাজ্য এবং শহরতরিতে পাড়ি দেয় ঢাকিরা।
ঢাকশিল্পীরা মুখিয়ে আছে, উৎসব কবে শুরু হবে, কবে হাতে আসবে লক্ষ্মী। গ্রাম থেকে শহরে আসার জন্য তোড়জোড় ।উৎসবের অঙ্গন মুখরিত হয় না ঢাকের আওয়াজ ছাড়া তাই পুজো মাত করার জন্য মহড়া চালাচ্ছেন ঢাকিরা। সারা রাজ্যের ঢাকিরাই চাইছেন, উৎসবের আনন্দমুখর অঙ্গনে সাড়া ফেলতে। কারণ ঢাকের বোল ফুটলে তবেই তাঁদের লক্ষ্ণীর ভান্ডার ভরে। সারাবছরের অর্থের খরা দূর হয়ে রোজগারে জোয়ার আসে। এবার পুজো নিয়ে নানা মহলে প্রচার চলছে। কেউ কেউ পুজোর আড়ম্বর কমিয়ে দিতে চান, আরজিকর কাণ্ডের জেরে। ঢাকিরা বলছেন,পুজো প্রাঙ্গণে ঢাকের বোল জোরালো হোক। যাতে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয়গানের বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।পুজোর দিকে তাকিয়েই স্বপ্ন বোনেন ঢাকিরা। ঠিকমতো বায়না এলে সংসারের অভাব কাটে। স্ত্রী সন্তানের মুখে হাসি ফোটে।
জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাসাতের রুইদাস পাড়াতে এখন যেন বাদ্যকারদের নাওয়া খাওয়া সময় নেই। না খাওয়া ভুলে এখন ব্যস্ত তাদের বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুত করতে।সারা বছর তাঁরা বিভিন্ন চাষবাস এবং অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পুজোর এই পাঁচটা দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে।
ইতিমধ্যে ই শহরতলীর বিভিন্ন দুর্গো উৎসব কমিটির সদস্যরা এসে তাদেরকে বায়না দিয়ে দিয়েছে।এখন বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতির কাজে লেগে পড়েছে। পরিবারের ছেড়ে পুজোর পাঁচটা দিন দূরে থাকলেও পাঁচ দিন পর ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ খুশিতে মেতে ওঠে। এই পাড়াতে প্রায় অনেকগুলি বাদ্যকার পরিবার রয়েছে। সকলেই পূজোর পাঁচটা দিনের অপেক্ষায় বসে থাকে।
এখান থেকে বহু ঢাকিরা ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেয় পুজোর পাঁচটা দিন।আর এই ছবি টা শুধু দক্ষিণ বারাসাত নয় জেলার মথুরাপুর, রায়দীঘি,জয়নগর,বহড়ু,নিমপীঠ, কুলতলি, মন্দিরবাজার,কুলপি সহ সর্বত্র।আর জি কর কান্ডের মাঝেই উৎসবে ফিরছে বাংলা ঢাকের কলতানে।