উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,কুলতলি : বিশাল এলাকা অরক্ষিত,আর তাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কুলতলির পিয়ালি বিটের বন কর্মীরা।সুন্দরবনের কুলতলির সীমান্তবর্তী এলাকায় বনদফতরের বারুইপুর রেঞ্জের অধীন পিয়ালী বিট অফিসটি অবস্থিত। চরম অব্যবস্থায় সুরক্ষা হীন হয়ে পড়ে আছে অফিসটি।এই বিট অফিসের বন কর্মীরা বারংবার প্রশাসনিক স্তরে জানানোর পরেও হাল ফেরেনি এই অফিসের।
কুলতলি ব্লকের মেরিগঞ্জ১,২, কুন্দখালি গোদাবর, গোপালগঞ্জ জালাবেড়িয়া ১,২ নং পঞ্চায়েতের মোট ছটি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে এই পিয়ালী বিট অফিসটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮০ সালে। এই বিট অফিসের লাগোয়া এলাকায় পড়ে সুন্দরবনের অন্যতম এক পর্যটন কেন্দ্র পিয়ালী নদীর ওপরে তৈরি কেল্লা।
এই বিট অফিসের অধীন ৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নদীর মধ্যে পড়ে, তাছাড়া ডোঙ্গাজোড়া,গোপালগঞ্জ ও মেরিগঞ্জ ১ নং এর মধ্যে থাকা ম্যানগ্রোভে জঙ্গল এলাকা ও পড়ে।এই অফিসে বর্তমানে ৯ জন কর্মী আছে। বিট অফিসার-১জন, সহকারি বিট অফিসার -২ জন, অরণ্য সাথী-৪জন এবং সাফাই কর্মী -২ জন।
সুন্দরবনের নদী মাতৃক এলাকার এই বিট অফিসে ঢুকলে দেখা যাবে প্রায় ১২ বিঘা জমির উপরে তৈরি এই বিট অফিসটি,তাঁর মধ্যে তিন বিঘা জায়গায় আছে একটি পুকুর, যে পুকুরে বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করে আনা কচ্ছপ গুলো কে রাখা হয়।জঙ্গলে ঘেরা এই এলাকায় কোনো প্রাচীর না থাকায় যেকোনো সময় যেকোনো অপরাধী এই অফিসে চত্বরেতে ঘাঁটি গেঁরে থাকতে পারে।
পুকুর থেকে চুরি হয়ে যায় উদ্ধার করা কচছপ ও। বিষাক্ত সাপ সহ অন্যান্য প্রাণীদের অবাধ বিচরণ এই এলাকায়।এই অফিসের অধীন কুলতলির বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর সাপ উদ্ধার করে এখানে আনা হলেও সাপ রাখার কোন ব্যবস্থা নেই নেই, নেই তাদের কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা।এমমকি সাপ ধরার ক্যাচারটিও খারাপ। যার ফলে সাপ ধরতে গেলে বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বন কর্মীদের।
এই বিট অফিসের এক কোনে পড়ে আছে বহু বছরের পুরনো ভাঙাচোরা একটি স্পিডবোর্ড।বর্তমানে এই বিট অফিসের কোন স্পিডবোর্ড বা নৌকা নেই নদীপথে যাতায়াতের জন্য।এলাকায় যাতায়াতের জন্য একটি মোটরসাইকেল থাকলেও গাড়ির তেলের সমস্যায় মোটর সাইকেলটি অযত্নে পড়ে আছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে এই পিয়ালী বিট অফিসের অধীন পিয়ালী আইল্যান্ডে,১৯৯৭ সালেকুন্দখালী গোদাবরে এবং ২০২২ সালে মেরিগঞ্জ দু’নম্বর পঞ্চায়েতের ডোঙাজোড়ায় লোকালয়ে বাঘ ঢুকেছিল।
জলদস্যু সহ ম্যানগ্রোভ নীধন কারিদের আনাগোনা এই নদী প্রবণ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এই অফিসের বনকর্মীরা। তাঁরা চান,সরকার থেকে এই অফিসের দিকে একটু নজর দেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে পিয়ালী বিট অফিসার আবু জাফর মোল্লা বলেন,এই অফিসটি বিশাল এলাকা নিয়ে থাকলেও কোন প্রাচীর না থাকায় দুষ্কৃতী ও সমাজ বিরোধীদের আস্থানা তৈরি হয়ে যাচ্ছে,প্রশাসনকে আমাদের তরফে জানানো হয়েছে।কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি।
এই বিট অফিসটিকে নতুনভাবে সাজানোর জন্য এবং আমাদের সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে কাজের সুবিধার জন্য একটি অটো ও মোটর সাইকেলের পর্যাপ্ত তেল পেলে কাজের সুবিধা হয়।এছাড়া জলপথে আমাদের যাতায়াতের জন্য স্পীডবোর্ড বা নৌকা হলে আরো ভালো হয়।
এ ব্যাপারে জেলা বন আধিকারিক (ডি এফ ও) নিশা গোস্বামী বলেন, আমি কিছুদিন আগেই এই জেলার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। আমি পুরো বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি কি করা যায়।