ওয়াশিংটন: বড় মাছ খেয়ে নেয় ছোট মাছকে। সবল গ্রাস করে দুর্বলের অধিকারকে। বিশ্বজুড়ে সেটাই যেন চলছে। এক নয়া মাৎসন্যায়। আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দেন, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই কানাডা থেকে আসা সকল পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এমন হুঁশিয়ারির পরই যুক্তরাষ্ট্রে ছুটে আসেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ৩০ নভেম্বর ফ্লোরিডায় মার-এ-লাগো রিসোর্টে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানেই ট্রাম্প বলেছেন, কানাডা যেন যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়। শুল্ক নিয়ে ট্রুডোর উদ্বেগ প্রকাশের পরেই ট্রাম্প মজার ছলে এমন মন্তব্য করেছেন। তবে ট্রাম্প কৌতুক করে এমন মন্তব্য করলেও কানাডায় কৌতূহল ও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্প এমন মন্তব্য যে আসলেই মজার ছলে করেছেন তা বোঝার চেষ্টা করছে কানাডা। কানাডা ৫১তম অঙ্গরাজ্য—এ নিয়ে সীমান্তের উভয় পাশেই মাঝেমধ্যে আলোচনা হয়। কেউ কানাডাকে ‘জুনিয়র আমেরিকা’ হিসেবেও উল্লেখ করে। ট্রাম্প যখন কানাডাকে অঙ্গরাজ্য করার কথা বলেন তখন জাস্টিন ট্রুডো ও তার মন্ত্রী হাসবেন কিনা- তা নিয়ে দ্বিধায় পড়েন। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলে স্থলভাগের দিক দিয়ে রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে। তবে কানাডাকে কোনোভাবেই মার্কিন অঙ্গরাজ্য করা যাবে না বলে দীর্ঘদিন ধরেই কানাডিয়ান জাতীয়তাবাদ সতর্ক করে আসছে। কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ বাড়লেও কানাডা তাদের সার্বভৌমত্ব বজায় রেখেছে।
মার্কিন সাংবাদিক ম্যাথুউ ইগলেসিয়াস সীমান্ত উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেছেন, সংযোজন স্পষ্টতই একটি ভালো ধারণা যা আমেরিকান এবং কানাডিয়ান উভয়কেই ভালো করে তুলবে। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর কানাডার মন্ত্রীরা একটু হলেও ‘বিপদে’ পড়েছেন। অনেক রিপোর্টারই ট্রাম্পের এমন মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাচ্ছেন। কানাডার পাবলিক সেফটি মন্ত্রী ডমিনিক লেব্লাংক বলেছেন, ট্রাম্প মজা করেছেন, তিনি আমাদের টিজ করেছেন। এ ছাড়া ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর ট্রুডোর সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা গেরাল্ড বাটস তার লিংকডইন ফলোয়ারদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। এখন সময়ই বলে দিবে কানাডা নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।