পুবের কলম প্রতিবেদক: বিধানসভার চলতি অধিবেশনের চতুর্থ দিনে নয়া ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, এই নতুন বিল লাগু হলে মুসলিমদের অধিকার খর্ব হবে। সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারায় স্বীকৃত ধর্মীয় ও সমাজকল্যাকর দাতব্য প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা এবং ১৪ নম্বর ধারায় বর্ণিত সাম্যের অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে কেন্দ্রের এই নতুন ওয়াকফ বিলে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিধানসভার প্রশ্ন উত্তর পর্বে ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী তথা সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মমতা জানিয়ে দেন এই বিল উত্থাপনের আগে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো আলোচনা করেনি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেনি। যদিও রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে। কেন্দ্রের এই ওয়াকফ বিলকে (সংশোধনী) সংবিধান এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী বলে অভিহিত করেন। এই বিলের বিরুদ্ধে তৃণমূলই সংসদে আক্রমণ শানাতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। যে কোনো ধর্মের ওপর আঘাত হানা হলে তৃণমূল এই রাজ্যেও প্রতিবাদ করবে বলে জানিয়ে দেন মমতা।
ব্রিটিশ আমলে যে ওয়াকফ আইন লাগু ছিল নয়া বিল এনে সেখানে সংশোধনী আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। মমতা বলেন ওয়াকফ সম্পত্তিতে শুধু মুসলিমরাই নয়, অনেক অ-মুসলিমও দান করেছেন। এই প্রসঙ্গে ঘুটিয়ারী শরীফ দরগায় দুলানি চিত্রকরদের পরিবার, বর্ধমানের মহারাজাদের দান দেওয়া ইত্যাদি প্রসঙ্গ তোলেন। ওয়াকফ সম্পত্তির টাকা ধর্মীয় বিষয় ছাড়াও দুস্থ মুসলিমদের পড়াশুনোর খরচ জোগানো, মেধাবৃত্তি দেওয়া, হোস্টেল তৈরি ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয় বলে জানান মমতা। কেন্দ্রের আনা সংশোধিত ওয়াকফ বিলে এই ওয়াকফ সম্পত্তির অধিকারে হস্তক্ষেপ করার কথা থাকছে, যা সংবিধান বিরোধী।
এদিন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে যেভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধারের কথা বলা আছে সেইভাবে সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের পথে নেমেছে। তবে কোনো বুলডোজিং না করে আইনি নোটিফিকেশন করে ওয়াকফ সম্পত্তি পুন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য বছরে ২২০০ কোটি টাকা ব্যয় করে রাজ্য সরকার। সংখ্যালঘু দপ্তর খাতে বরাদ্দও তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে প্রায় দশ গুণ বাড়ানো হয়েছে। মুসলিম ছাড়াও তফশিলি জাতি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে তা মন্ডল কমিশনের নিয়ম মেনেই। কিন্তু বিজেপি হটাৎ করে ওয়াকফ বিল আনতে চেয়ে এক শ্রেণীর মানুষের ওপর আঘাত আনতে চাইছে। আপাতত এই বিল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত সময় পাওয়া গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ২ ডিসেম্বর এই নয়া ওয়াকফ বিল কেন্দ্রীয় সরকার যাতে বহাল না করে তার জন্য প্রস্তাব রাখা হবে।