নিম্নচাপ-পূর্ণিমার ভরা কোটালের জোড়া ফলায় নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত একাধিক গ্রাম, আতঙ্কিত এলাকাবাসী
পুজো কমিটির সদস্যদের হাতে চেক তুলে দিলেন জয়নগরের বিধায়ক,বারুইপুর এসডিপিও
সংসদীয় কমিটির ২ চেয়ারম্যান পদে তৃণমূল কংগ্রেস
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ গত সোমবার সাতসকালেই দূর্ঘটনার কবলে পড়েছিল আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন। পেছন থেকে একই লাইনে ছুটে আসা মালগাড়ির ধাক্কায় প্রাণহাণীর পাশাপাশি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনে থাকা হাই ক্যাপাসিটি পার্সেল ভ্যান। ভয়াবহ ওই ট্রেন দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় মালগাড়ির চালক সহ একাধিক ব্যক্তির। একই লাইনে কীভাবে দুটি ট্রেন চলে আসে তা নিয়ে শুরু হয় জোর বিতর্ক।যদিও, দূর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির তদন্ত শুরুর আগেই রেল বোর্ড ঘোষণা করে দিয়েছে, মালগাড়ির চালকের দোষেই ওই দিন দূর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।রেল বোর্ডের বক্তব্য, মালগাড়ির চালক সিগন্যাল ভেঙে এগিয়ে যান। আর তার ফলেই ওই দূর্ঘটনা ঘটে।যদিও রেলেরই আরেকটি সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘পেপার ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়া হয়েছিল মালগাড়িকে। সোমবার সকাল থেকেই ওই লাইনে সিগন্যালে ত্রুটি ছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়িটি যাওয়ার আগেও এই লাইন দিয়ে আরেকটি মালগাড়ি গিয়েছিল। তখনও সিগন্যাল বিভ্রাট ছিল, পেপার সিগন্যাল দেখানো হয়েছিল। কিন্তু রেলবোর্ডের রিপোর্টে সেই বিষয়টিও আড়াল করা হয়েছে।
পাশাপাশি, দুর্ঘটনার পরই মালগাড়ির জীবিত সহকারি চালককে মৃত ঘোষণা করেছে রেলবোর্ড।
উল্লেখ্য, প্রথমে রেলের তরফে জানানো হয়েছিল, মালগাড়ির চালক ও সহকারি চালকের মৃত্যু হয়েছে। পরে জানা যায়, ওই দুর্ঘটনায় কেবল মালগাড়ির চালক অনীল কুমারের মৃত্যু হয়েছে। মালগাড়ির সহকারি চালক মনু কুমার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু কেন রেলের তরফ থেকে প্রথমেই মালগাড়ির দুই চালকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আনা হল, কেন সঠিক তথ্য যাচাই না করেই সাংবাদিক বৈঠক করে সহকারি চালককেও ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সব চেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, দূর্ঘটনার পর থেকেই মালগাড়ির চালককে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে রেলবোর্ড। মঙ্গলবারই মালগাড়ির মৃত চালক ও সহকারি চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। প্রথমে জানা গিয়েছিল এফআইআর দায়ের করেন চৈতালি দেব নামে এক আহত যাত্রী। কিন্তু চৈতালি দেব নামে ওই যাত্রী দাবি করেছেন, এফআইআর-এর বিরুদ্ধে তিনি কিছুই জানেন না। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে বাড়ি ফেরেন। তিনি কোনও লিখিত অভিযোগ দায়েরই করেননি। ফলে সেখানেও এক জটিলতা তৈরি হয়েছে। এমনকী দুর্ঘটনার পরই রেলবোর্ডের চেয়ারপার্সন সাংবাদিক বৈঠক করে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, মালগাড়ির চালকই সিগন্যাল ভেঙে এগিয়ে গিয়েছিলেন। রেল বোর্ডের বিবৃতির পর অনেকেই মনে করছেন, মালগাড়ির চালককে কার্যত দোষী সাব্যস্ত করার জন্যই এফআইআর করা হয়েছে! এমনকী কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির তদন্ত শেষ আগেই কীভাবে রিপোর্ট সামনে এলো তা নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন।