উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর : চিকিৎসককে হুমকি দিয়ে এবার গ্রেফতার জয়নগরের এক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। ‘চাকরি খেয়ে নেব রে, আমি তৃণমূল নেত্রী’! ডাক্তারকে হুমকি, বারুইপুরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার এক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী।স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযুক্ত মুনমুন জয়নগর ২ নং ব্লকের গড়দেওয়ানি গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনের চক এলাকার বাসিন্দা।

ওই এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলেই তিনি পরিচিত। মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ঢোকেন ওই তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মী।হাসপাতালের লাইনে দাঁড়াতে তিনি নারাজ। লাইন ভেঙে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাবি করেন,তখনই তাঁর রোগীদের দেখতে হবে।তখনই ফিটনেস সার্টিফিকেট দিয়ে দিতে হবে। চিকিৎসক তাতে রাজি-না হওয়ায় তাঁর উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীর বিরুদ্ধে। নিজেকে তৃণমূলের নেত্রী বলে দাবি করে তিনি তুইতোকারি করেন কর্তব্যরত চিকিৎসককে। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘তোর চাকরি খেয়ে নেব।’’ রুখে দাঁড়ান ওই চিকিৎসক। তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসেন অন্যান্য রোগীরা। শেষমেশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ওই স্বঘোষিত তৃণমূল নেত্রী মুনমুন মোল্লা। অভিযুক্ত মুনমুন জয়নগর ২ নং ব্লকের গড়দেওয়ানি পঞ্চায়েতের  বামুনের চক এলাকার বাসিন্দা। এলাকায় তৃণমূলের কর্মী বলেই তিনি পরিচিত। বেশ কয়েক জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ঢোকেন তিনি।

ওই যুবকদের চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল চিকিৎসকের শংসাপত্রের। অভিযোগ, হাসপাতালে ঢুকেই মুনমুন দাবি করেন, তিনি যাঁদের নিয়ে এসেছেন, তাঁদের সবাইকে আগে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দিতে হবে। তখন অভিজিৎ নস্কর নামে এক চিকিৎসক রোগীদেখছিলেন। তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে ওই মহিলা কে অপেক্ষা করতে বলেন। তার পরেই শুরু হয় চমক-ধমক।ওই চিকিৎসকের বলেন, ‘‘অন্যান্য দিন ওপিডিতে যেমন ভিড় থাকে,আজ ও ছিল।রোগী দেখছিলাম।

তখনই ওই মহিলা এসে ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ দিতে বলেন। আমি অপেক্ষা করতে বলায় উনি জানান, আমার চাকরি খেয়ে নেবেন। আমি বললাম, আপনি যা পারেন করুন। ডাকুন, আপনার কোন নেতাকে ডাকবেন। চাকরি গেলে যাবে।’’ ওই সময় উপস্থিত রোগীরা মহিলার এই ব্যবহারের প্রতিবাদ জানান। তাঁদেরই কেউ থানায় খবর দিয়েছিলেন। পরে বারুইপুর থানার পুলিশ এসে অভিযুক্তা কে গ্রেফতার করে নিয়ে যান।ওই চিকিৎসক জানান, তাঁরা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বারুইপুর থানায়।

এ ব্যাপারে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীরাজ রায় বলেন, ‘‘বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের পক্ষ থেকেও থানায় আলাদা করে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আসলে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবে এই রকমের ঘটনা ঘটছে। তবে যে সমস্ত রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই রুখে দাঁড়িয়েছেন।’’

বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস জানান, পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।অভিযুক্ত মুনমুন মোল্লাকে বুধবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।এব্যাপারে জয়নগর ২ নং ব্লকের গড়দেওয়ানি অঞ্চল তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি শিক্ষক সাহাবুদ্দিন শেখ বুধবার বলেন,মুনমুন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সাধারণ কর্মী। তবে ওর এই আচরণ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়।আইন আইনের কাজ করবে।আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।