Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন

ম্যানগ্রোভে রাখি পরিয়ে উৎসব পালন সুন্দরবনে

Bipasha Chakraborty

Published: 20 August, 2024, 03:48 PM
ম্যানগ্রোভে রাখি পরিয়ে উৎসব পালন সুন্দরবনে

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : বেঁচে থাক বাদাবন, গাছেদের রাখি পরিয়ে সুন্দরবন রক্ষার অঙ্গীকার ছাত্রীদের।শহরের মানুষ যায়,বাঘ দেখতে বোটে করে জঙ্গল সাফারি করে ফিরে আসে। কিন্তু ওদের কাছে তো শুধু তা নয়, বরং বাঁচার রসদ। জীবনের সঙ্গে ওতপ্রতো ভাবে জড়িয়ে থাকে ওরা, খুব কাছের কেউ যেন। সোমবার রাখি বন্ধনের দিন পূর্বা শার্ট ম্যানগ্রোভ আর্মিরা আসলে এটা প্রকৃতপক্ষেই ম্যানগ্রোভ বন্ধন নামে একটি প্রচলন প্রথা চালু করেছে বাস্তব ক্ষেত্রে সোসিও ইকোলজিক্যাল একটি সমন্বয় তৈরি করার চেষ্টা। ম্যানগ্রোভ জঙ্গল ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো আমাদের ভালো থাকার জন্যই ম্যানগ্রোভের বেঁচে থাকার অবশ্যই প্রয়োজন তাই আমরা একে অপরের ওপর অতপ্রোতভাবে জড়িত।এটা একটি সম্পর্ক তৈরি করা।তাই গাছে পরিয়ে দিল রাখি। যেন নিজের পরিজনকে রাখি পরিয়ে আত্মীয়তার বন্ধনে মুড়ে দিল তাঁরা।

বঙ্গোপসাগরের ঝড়-ঝঞ্ঝার হাত থেকে সুন্দরবন তথা দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশকে আগলে রেখেছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। সুন্দরবনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই বাস্তুতন্ত্রের প্রায় ৪২৬০ বর্গ কিমি জায়গা সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এর বাইরে ট্রানজিশন জোনে কয়েক লক্ষ মানুষের বাস, যাঁরাও সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত। অনেক সময়ই বাস্তুতন্ত্রের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চলে জীবন-জীবিকার রসদ সংগ্রহ।

 ২০০৯ সালের আয়লার ও ২০১১ সালে বুলবুল ২০১৩ সালে আমফানের পরই অবশ্য এখানকার মানুষ বুঝেছিলেন, কোনও কংক্রিট বা ইটের সারি এই মাটির নদীবাঁধকে ধরে রাখতে পারে না। একমাত্র ভরসা ম্যানগ্রোভই। যার প্রমাণ ফের পাওয়া গেল এ বছর উম্পুনের সময়।সুন্দরবন-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান।

কিন্তু যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে ছিল সুন্দরবনে, ম্যানগ্রোভের বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা না থাকলে ক্ষতি হত তার কয়েকগুণ বেশি। একইভাবে বুলবুলের সময়ও সুন্দরবনকে রক্ষা করেছিল এই গাছ গাছকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলেন রাখির বাঁধন শক্ত করবে মাটির সন্তানদের সঙ্গে বাদাবনের সম্পর্ককে। গাছগুলিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাই সচেষ্ট গ্রামবাসীরা। ওঁরা জানেন, বাদাবন বাঁচলেই বাঁচবে বাঁধ, বাঁচবে ওঁদের গ্রাম, বাঁচবে ওঁদের জীবন, বাঁচবে ওঁদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, ওঁদের সন্ততি। এই আশ্বাসদাতারা নির্বাক বটে, কিন্তু কে বলেছে, কথা দেওয়ার জন্য কথা বলা জরুরি? ওরা চুপচাপ রক্ষা করে যাবে সুন্দরবনকে, সেখানকার মানুষকে। পরম আত্মীয়রা তাই তো করে।

Leave a comment