Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

উচ্চ-ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের ছেঁড়া তার থেকে বড় ধরণের বিপদ এড়াতে  এগিয়ে এলেন শিক্ষক

Bipasha Chakraborty

Published: 19 July, 2024, 07:38 PM
উচ্চ-ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের ছেঁড়া তার থেকে বড় ধরণের বিপদ এড়াতে  এগিয়ে এলেন শিক্ষক

 

পুবের কলম প্রতিবেদক, শক্তিগড়: অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল শক্তিগড় থানার আটাঘর এলাকার গ্রামবাসী ও পথ চলতি মানুষ।  জুম্মার দিন শুক্রবার ওই রাস্তার উপর দিয়েই গ্রামবাসীকে নামায পড়তে যেতে হয়। তাছাড়া সেটি গ্রামে প্রবেশেরও মূল পথ। ঠিক সেই সময় মেন রাস্তা থেকে গ্রামের সংযোগকারী এই রাস্তার প্রবেশের মুখে ১১ হাজার ভোল্টের তার মাটিতে বিপজ্জনক ভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায়। নামাযের  জন্য স্থানীয় মাদ্রাসার পড়ুয়ারাও  ছিল মসজিদ মুখী। প্রত্যক্ষদর্শী জুহুর আলি খান, মলয় ঘোষ, মৌসম সেখ দের দাবী, তাল গাছের শুকনো পাতা তারের উপর পড়েই নাকি তার ছিঁড়ে যায়। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, গাছের পাতা পড়ে যদি ১১ হাজার ভোল্টের তার ছিড়ে যায় তাহলে পথচারী মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?

 এদিকে নামায পড়তে যাওয়ার পথে এই ভয়াবহ বিষয়টি স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক জাহির আব্বাসের নজরে এলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থমকে যান। তিনি ইলেকট্রিক অফিসের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। সেখানে যোগাযোগ না  হওয়ায় দ্রুত যোগাযোগ করেন বর্ধমান-২ ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাসের সাথে। তিনি তড়িঘড়ি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং শক্তিগড়  ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিস থেকে কর্মীরা এসে ছেঁড়া তার জুড়ে দেন।

এদিকে, স্থানীয় শিক্ষক জাহির আব্বাস বাবুর নামাজের থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচানোকে গুরুত্ব দিতে যে পদক্ষেপ গ্রহণ, তা এলাকাবাসীর কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

আব্বাস বাবু বলেন, সব ধর্মই  আচার-সর্বস্বতার থেকেও মানুষের  জীবনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এক্ষেত্রে ইসলামও আলাদা নয়। সেই বুঝেই আমি নামাজের থেকে মানুষের প্রাণ বাঁচানো কে গুরুত্ব দিয়েছি। এটা এমন কিছু নয়। এটা করতে পেরে আমি তৃপ্ত। কর্মী রা দ্রুত চলে আসায় নামাজ পড়তে পেরেছি।

তিনি আরও  বলেন, নামায পড়ে এসে যদি দেখতাম বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মানুষের লাশ পড়ে আছে, তাহলে কি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম? আশা করব, আমরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন ধর্মীয় পরিমন্ডলে থেকেও মানুষের জীবনকে বাঁচাতে বেশি গুরুত্ব দেবো।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে এই এলাকায় ছেলেধরার গুজবে এলাকারই এক যুবককে গণপিটুনির হাত থেকে উদ্ধারে তিনি ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এলাকারই ভূমিপুত্র তথা বর্ধমান-২ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সরিফুল মন্ডল জানান, মাস্টার মশাই খুব ভালো কাজ করেছেন। তাঁকে সাধুবাদ জানাই।  তবে, এভাবে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়া দুর্ভাগ্যজনক। বিদ্যুৎ দপ্তরে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।

Leave a comment