বার্লিন: ভারতে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে সংখ্যালঘু নির্যাতন। মোদি শাসনামলে মুসলিম, খ্রিস্টান উপসনালয়ে যে হারে আক্রমণ শানানো হচ্ছে তা অগ্রহণযোগ্য। ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিটি গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার। অথচ ভারতে সেই মৌলিক অধিকার পালনে বাঁধা প্রদান করছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। এবার ভারত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। বলা বাহুল্য, ‘ফ্রিডম: মেমোরিস ১৯৫৪-২০২১’ নামে নিজের আত্মজীবনী নিয়ে সম্প্রতি একটি বই প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। বইটিতে তিনি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া বিশেষ বিশেষ কয়েকটি জিনিস আলোকপাত করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হল ভারতীয় দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ও ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে দেশে সংখ্যালঘু অধিকার খর্ব ও তাঁদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা। বইটির একটি অংশে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে ভারতীয় হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ভারতের বর্তমান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছেন। যেখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রধান বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। পাশাপাশি মনমোহন সিং ও মোদির সাম্রাজ্যে ভারতের সংখ্যালঘুদের ওপর কেমন আচরণ করা হচ্ছে তা তুলে ধরেছেন অ্যাঞ্জেলা। আর যা বেশ উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন একাংশ। তবে শুধু অ্যাঞ্জেলার আত্মজীবনী নয়, কাকতালীয়ভাবে, জার্মানির প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ওয়াল্টার লিন্ডনারের ভারত সম্পর্কিত আরেকটি বই এদিন প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতেও ভারতে মুসলিম, খ্রিস্টান নিধন যজ্ঞের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। একইভাবে কী ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে।
এদিনের উন্মোচনী অনুষ্ঠানে সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল জানান, ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। তবে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে বেজায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ভারত ধর্মীয় সহনশীলতার দেশ ছিল, আছে, থাকবে। তাই চরমভাবে বিষয়টি অস্বীকার করে। অ্যাঞ্জেলা জানান, আমি ভারতীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ওপর একটি রিসার্চ করেছিলাম, যার ফলাফল ভয়াবহ। তাই মোদির কথা বিশ্বাস করিনি আমি। কারণ বাস্তবতা ভিন্ন। আমি বিষয়টি নিয়ে একমত হতে পারিনি। অন্যদিকে মনমোহন সিং প্রসঙ্গে বলেছেন, উনি আমাকে ভারতীয় সংস্কৃতি, ভাষাগত পার্থক্য সম্বন্ধে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন। আমাদের উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। এখনও আছে। ওনার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। আর বৈচিত্রই ভারতের অন্যতম অস্ত্র এটা উনি আমাকে জানিয়েছিলেন।