পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বেকরার করকে হমে য়ুঁ না জাইয়ে…। গানের কলি কানে এলে আজও হৃদয়ে মাদল বেজে ওঠে আট থেকে আশির। ষাটের দশকের এই গান কখনও পুরনো হওয়ার নয়। আর এই গানের দৃশ্য মনে এলেই প্রথমেই যাঁর মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে তিনি ওয়াহিদা রহমান। শুধু ‘বিশ সাল বাদ’ নয়, ‘গাইড’, ‘পিয়াসা’, ‘কাগজ কে ফুল’, ‘সাহেব বিবি অর গুলাম’, ‘খামেশি’, ‘চৌধভি কা চাঁদ’-এর মতো অজস্র হিট ছবিতে অনবদ্য অভিনয় তাঁকে সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের আসনে জায়গা করে দিয়েছে। আর দর্শক হৃদয়ে তো তিনি সর্বকাল আসীন। সে-কালের হিল্লোল তোলা টিনেজার নায়িকা এখন ৮৫।
যদিও দর্শক মননে তিনি চিরনবীনা। চলচ্চিত্র জগতে অসামান্য অবদানের জন্য ওয়াহিদা রহমানকে দেওয়া হচ্ছে চলচ্চিত্র জগতের সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘দাদা সাহেব ফালকে’। মঙ্গলবার এই খবর জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।
ট্যুইটারে এই খবর জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ভারতীয় চলচ্চিত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ওয়াহিদা রেহমানজিকে এই বছর মর্যাদাপূর্ণ দাদাসাহেব ফালকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হচ্ছে। এই ঘোষণা করে আমি এক বিরাট আনন্দ ও সম্মান অনুভব করছি।’
মন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘এমন একটা সময়ে যখন সংসদে ঐতিহাসিক নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম (মহিলা সংরক্ষণ বিল) পাশ হয়েছে, তখন তাঁকে এই আজীবন কৃতিত্বের পুরস্কারে ভূষিত করা ভারতীয় চলচ্চিত্রের একজন নেতৃস্থানীয় অভিনেত্রীর জন্য যথাযথ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। যিনি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সমাজের বৃহত্তর অংশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছেন। আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই। তাঁর সমৃদ্ধ কাজের প্রতি আমার শুভেচ্ছা জানাই।’ উল্লেখ্য, ৫ দশকের বেশি কর্মজীবনে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ওয়াহিদা।
‘রেশমা অর শেরা’ ছবির জন্য পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পেয়েছেন পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণ সম্মানও। ১৯৫৫ সালে তেলুগু সিনেমা ‘রোজুলু জু মারায়ি’ এবং ‘জয়সিমহা’ দিয়ে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। পরের বছর ১৯৫৬ সালে অভিনেতা দেব আনন্দের সঙ্গে প্রথম হিন্দি ছবি ‘সিআইডি’-তে অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পান। হিন্দি ছবিতে তাঁর জয়যাত্রার সেই শুরু। পাঁচ দশকেরও বেশি কর্মজীবনে কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী বিভিন্ন ভাষায় ৯০টিরও বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গুলজার, রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, শশী কাপুর, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার পেয়েছিলেন।