নয়াদিল্লি, ১৩ জানুয়ারি: মণিপুরে ফের স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে আসাম রাইফেলসের অস্থায়ী ক্যাম্প। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা আসাম রাইফেলসের অস্থায়ী ক্যাম্পে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং এলাকা থেকে আসাম রাইফেলসের কর্মীদের প্রত্যাহার করার দাবি জানাতে থাকে।
ঘটনাটি ঘটে কামজং জেলার হংবেং গ্রামে। ইম্ফল-মায়ানমার সড়কের সীমান্তে কাসোম খুলেন ব্লকের কাছে চেকিংয়ের সময় আসাম রাইফেলসের জওয়ানরা গ্রামবাসীদের অযথা হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ। লাগাতার হয়রানিতে এমনিতেই গ্রামবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল।
গ্রামবাসীরা আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে লাগাতার হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হংবেং এলাকায় নাগা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ি তৈরির জন্য কয়েকজন কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকজন গ্রামবাসীর অভিযোগ, আসাম রাইফেলসের জওয়ানরা কাঠবোঝাই গাড়ি আটকে দেয়। এরপরই গ্রামবাসীরা জওয়ানদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের যখন তর্ক-বিতর্ক চলছে, সেসময় ওই এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বিধায়কলিশিও কিশিং। তিনি বিবাদ মেটাতে উদ্যোগী হন। আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের বলেন, কাঠ পরিবহণের বাধা দেবেন না। কাঠ বা কাঠ পরিবহণের অনুমতি দেওয়া বা না দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে শুধুমাত্র মণিপুর বনবিভাগের, আসাম রাইফেলসের নয়।
ভাইরাল ভিডিয়োতে এই বিষয়ে কিশিংকে আসাম রাইফেলস অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। স্থানীয় বিধায়কের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও, আসাম রাইফেলস কোনওরকম সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে, ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিধায়কের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের পরে, স্থানীয় বাসিন্দারা আসাম রাইফেলসের অস্থায়ী শিবিরে জড়ো হয় এবং তল্লাশি অভিযান বন্ধ করা ও এলাকা থেকে আসাম রাইফেলস কর্মীদের প্রত্যাহারের দাবি জানায়। আসাম রাইফেলসের কর্মীরা ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালিয়ে এবং কাঁদানে গ্যাসের শ্যেল ফাটানোয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।
কামজংয়ের পুলিশ সুপার নিংসেম ওয়াসুম ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি। আসাম রাইফেলসের তরফে জানানো হয়েছে, ‘১১ জানুয়ারি, হংবেং পোস্টে মোতায়েন আসাম রাইফেলসের কর্মীরা একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন যে কাঠ বোঝাই গাড়িটির নথি নেই। আসাম রাইফেলসের কর্মীরা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গাড়িটি থামিয়ে দেয়।’