দোহা: ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর যুদ্ধ থামবে? এমন জল্পনা চলছিল মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। তিনি জিতেছেন, তবে যুদ্ধ থামেনি। যুদ্ধবাদ নেতানিয়াহু হামলার ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন। ট্রাম্প এখনও শপথ নেননি। বাইডেন সরকার আগের নীতি অনুসরণ করে চাপ বাড়াচ্ছে হামাসের উপর। যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসকে বহিষ্কার করতে সম্মত হয়েছে কাতার। এরই মধ্যে গোষ্ঠীটির নেতাদের দোহা ছাড়ার নির্দেশও দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় কাতার মধ্যস্থতা করে আসছিল হামাস-ইসরাইল-আমেরিকার মধ্যে। এখন হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করেছে কাতারের। ফলে আলোচনাও চলে যাবে বিশ বাঁও জলে।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অনেক শীর্ষ নেতা কাতারের রাজধানী দোহায় বসবাস করে আসছেন। গাজা সংঘাতের শুরু থেকে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অন্যতম প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে কাতার। এদিকে এসব নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে কাতার সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামাস একটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যারা মার্কিনিদের হত্যা করেছে এবং মার্কিনিদের জিম্মি করে রেখেছে। জিম্মিদের মুক্তির প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করার পর গোষ্ঠীটির নেতাদের আর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মিত্র দেশের রাজধানীতে স্বাগত জানানো উচিত নয়।’
Read More: মানুষের ভুয়ো তথ্য বিশ্বাসে পরিবর্তন আনছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে হামাসের হাতে বন্দি হার্স গোল্ডবার্গ-পোলিন নামে এক আমেরিকান-ইসরাইলি জিম্মির মৃত্যু হয়। এর কয়েক সপ্তাহ পর মার্কিন কর্মকর্তারা কাতার কর্তৃপক্ষকে চাপ দেয় যে, হামাসকে তাদের দেশে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে কাতার। এবং প্রায় এক সপ্তাহ আগে হামাসকে কাতার ত্যাগ করার নোটিশ দিয়েছে। কাতারের একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজায় শান্তি স্থাপনের জন্য সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে না নেয়া এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দোহা।
ওই কর্মকর্তার ভাষায়, ‘এখন থেকে দুই সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু হামাস তাতে সায় দেয়নি। তারপর ওয়াশিংটন কাতার সরকার বরাবর অনুরোধ করে যে হামাসকে যেন (দোহা ত্যাগের) নোটিশ দেওয়া হয়। আমরা সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছি।’
তবে নোটিশ দেওয়া হলেও কত দিনের মধ্যে হামাস নেতাদের দোহা ছাড়তে হবে- এ সংক্রান্ত বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি ওই কর্মকর্তা। কাতার ছেড়ে হামাস নেতারা কোথায় যাবেন তাও স্পষ্ট নয়। তবে তুরস্ককে একটা সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে মনে করা হচ্ছে। যা নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।