বাবা রিকশা চালক,
UPSC Result 2025: মহারাষ্ট্রের প্রথম মহিলা আইএএস হতে যাচ্ছেন আদিবা আনাম

- আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার
- / 261
UPSC Result 2025: মহারাষ্ট্রের প্রথম মহিলা আইএএস হতে যাচ্ছেন আদিবা আনাম
পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: UPSC Result 2025… আদিবা আনাম! মহারাষ্ট্রের প্রথম মুসলিম মহিলা আইএএস। রাজ্যের ইয়াবতমল জেলার এক অখ্যাত গ্রামের অতি দরিদ্র ঘরের মেয়ে আদিবা। আব্বা রিকশাচালক! আশৈশব অনটনকে সঙ্গী করেই এই তরুণী আজ সফল আইএএস অফিসার (UPSC Result 2025)। ইউপিএসসি ২০২৪-এর পরীক্ষায় সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক ১৪২ অর্জন করে এক অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই মনের গোপনে বুনেছিলেন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। সেভাবেই শুরু করেছিলেন পড়াশোনা।
pahalgam Terror Attack: পহেলগাঁওয়ের সন্ত্রাসী হামলার তদন্তভার এনআইএ-র কাঁধে
তবে নিয়তির ছিল অন্য পরিকল্পনা। মামা জান নিজামউদ্দিন সাহেবের কথায় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। তবে এই পথ সহজ ছিল না। টানা তৃতীয়বার ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়ে একসময় ভেঙে পড়েন আদিবা। তখন মামার বলা দুটো লাইনে তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তা হল, কষ্ট করো, আর আল্লাহ্র ওপর বিশ্বাস রাখো! দেখবে মহান রাব্বুল আলামিন সব দুঃখ, দুর্দশা একদিন ঠিক দূর করে দেবে। সফলতা একদিন তোমার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছাবেই। সেই কথা মতোই দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার আবাসিক কোচিং একাডেমিতে যোগদান করেন আদিবা। অবশেষে তিনি সফল হন। মহারাষ্ট্র থেকে প্রথম মুসলিম মহিলা হিসেবে আইএএস হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছেন আদিবা।
Pahalgam terror attack: কাশ্মীরের দুই বোন বাঁচালেন পর্যটকদের
একটি সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা তাঁর। জেলা পরিষদ উর্দু স্কুল থেকে শিক্ষাজীবনের যাত্রা শুরু হয় । ছোট্ট থেকেই মেধাবী পড়ুয়া ছিলেন। এতদিন যাবৎ সেই ধারা বাজায় ছিল । আদিবা মাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ, বিজ্ঞানবিভাগ নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ নিয়ে স্কুল জীবন অতিক্রম করেন। পরে আদিবা পুনের আবেদা ইনামদার কলেজ থেকে ৮৫.২০ শতাংশ নম্বর পেয়ে গণিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তারপর স্নাতকোত্তর। এদিকে নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও, তিনি অ্যাকাডেমিক লাইনে যান নি।
তখন থেকেই ইউপিএসসির (UPSC Result 2025) জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। যদিও শুরুর দিকে পথ এত সহজ ছিল না। জীবনে চলার পথে বহু প্রতিকূলতা দেখেছেন আদিবা। প্রতিকূলতাকে হাতিয়ার করেই সাফল্য পেয়েছেন আদিবা। প্রথমে দু’বার বাড়ি থেকে পরীক্ষায় বসে ব্যর্থ হয় আদিবা। পরে মকসুদ খান সাহেবের পরামর্শে মুম্বইয়ের হজ হাউস থেকে তৃতীয়বার চেষ্টা করেন। খুব কাছে গিয়েও চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাননি। তারপরেই মহারাষ্ট্র থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। ভর্তি হন জামিয়া মিলিয়াতে। যেখানে সাফল্য পান। তবে বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া হওয়া সত্ত্বেও ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে উর্দু সাহিত্যকে বেছে নেওয়ায় অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। আদিবার মতে, উর্দু আমার শিকড়। জীবনে চলার পথে এই শিকড় আমাকে সাহায্য করবে। এই শিকড়কে মজবুত করতেই ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে উর্দুকে বেছে নিয়েছি।
বাবা’মার কথা বলতে গিয়ে আদিবা বলেন, আমার বাবা কখনও আমাকে থামতে বলেননি। উনি শুধু দুয়া করতেন আর বলতেন’ আল্লাহ্ একদিন তোমাকে সফল করবেই। হার মানবে না। সংগ্রাম চালিয়ে যাও। সফলতা একদিন তোমার সামনে থাকবে। আজ আমার বাবার দুয়া পূর্ণতা পেল। এছাড়া কঠোর পরিশ্রম তো রয়েছেই। তাঁর কথায় জীবনের সব থেকে বড় অ্যাসেট হল মানুষের শিক্ষা। তাই নিজের লক্ষ্যের দিকে অবিচল থেকে এগিয়ে যেতে হবে, তবেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।