তিউনিস, ৮ অক্টোবর: একতরফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন একনায়ক নেতা কাইস সাঈদ। সোমবার দেশটির নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করে।
রাজধানী তিউনিসে এক সংবাদ সম্মেলনে, তিউনিসিয়ার নির্বাচন কমিশন প্রধান ফারুক বাউসকার জানান, নির্বাচনে মাত্র ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৯০ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন সাঈদ।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজিমুন পার্টির কারাবন্দি নেতা আইয়ুব জাম্মেল পান মাত্র ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ ভোট। অপর প্রার্থী, সাঈদের ঘনিষ্ঠ জুহাইর মাগজাউই পান মাত্র ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালে ‘আরব বসন্ত’-এর জেরে অস্থিতিশীল তিউনিসিয়ায় প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কাইস সাঈদ। তবে ২০২১ সালে তিনি বিতর্কিতভাবে দেশের ক্ষমতা দখল করেন।
অর্থনৈতিক সংকট ও কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে দেশ যখন বিপর্যস্ত, তখন প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেসিসিকে বরখাস্ত করে স্বঘোষিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সাঈদ। এরপর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার ও বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে এনে নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেন।
সাঈদ এরপর থেকে ডিক্রি জারি করে দেশ শাসন করে আসছেন। বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভকে তিনি গুরুত্ব দেননি। বরং সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্ট পদকে আরও শক্তিশালী করেন। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়াই তিনি সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেন।
২০২২ সালে একটি নতুন বিতর্কিত সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করে এবং পার্লামেন্টকে দুর্বল করে দেয়। এসব ঘটনায় তিউনিসিয়ার রাজনীতি ও অর্থনীতি গভীর সংকটে পতিত হয়। বর্তমানে দেশটিতে বেকারত্বের হার ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে ও প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। এমন প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় মেয়াদে সাঈদের ক্ষমতাগ্রহণ তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রের জন্য ভালো সংবাদ নয়।