উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: ইতালি থেকে প্যাকেজিংয়ের যন্ত্র না আসায় তৈরি হয়েও চালু হতে পারলো না জয়নগরের মোয়া হাব,হতাশ মোয়া ব্যবসায়ীরা। জয়নগরের মোয়ার নাম এখন বিশ্বজোড়া। তারপর জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই মিষ্টান্নটি আর ও নামজাদা হয়ে উঠেছে। মোয়ার প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মোয়া হাব তৈরির কথা ঘোষণা করে ছিলেন। তারপর জয়নগর মজিলপুর পুর এলাকায় মোয়া হাবের জন্য ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছিল খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ড।সেই কাজ শেষ হয়ে ও গিয়েছে। কিন্তু উদ্বোধন এখনও হয়নি।
খাদি বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতালি থেকে প্যাকেজিংয়ের জন্য মেশিন আসতে দেরি হচ্ছে। ফলে দেখা দিয়েছে জটিলতা। খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ডের প্ল্যানিং বিভাগের আধিকারিক বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে তা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করাহচ্ছে।’ তবে উদ্বোধন কবে হবে তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর তাদের কাছ থেকে মেলেনি। এ কারণে জয়নগর ও বহডুর মোয়া ব্যবসায়ীরা হতাশ।জয়নগর মজিলপুর পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে পুরসভার ইন্দিরা উদ্যান। সেখানে সাড়ে চার কাঠা জমিতে মোয়া হাব তৈরি করা হয়েছে। দু’কোটি ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রজেক্ট হয়েছে। এর আগে খাদি বোর্ডের কর্তারা জানিয়েছিলেন,চলতি বছরের শীতের আগে মোয়ার হাব চালু হবে।
প্রসঙ্গত, জয়নগরে হাব তৈরির পরিকল্পনা হয় প্রায় তিন বছর আগে। কিন্তু বারবার জায়গা বদলেরপরিকল্পনা হওয়ায় কাজ থমকে ছিল।প্রথমে জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল ও তৎকালীন জয়নগর মজিলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুজিত সরখেলের উদ্যোগে পৌরসভার মিত্রগঞ্জ হাটে জায়গা দেখা হয়ে ছিল। কিন্তু সেই জায়গা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল খাদি বোর্ড। ফলে কাজ পিছিয়ে যায়। এরপর পুরসভায় কংগ্রেসের হাত থেকে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল কংগ্রেস। চেয়ারম্যান তৃনমূল কংগ্রেসের সুকুমার হালদার হাব তৈরির জন্য তিন নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা চিহ্নিত করেন।গত জানুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী জয়নগরের বহডু হাইস্কুল মাঠে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসে মোয়া হাবের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। সেই হাবের এক তলায় হবে কমন ফেসিলিটি সেন্টার।
Read More: হারিয়ে যাওয়া ১১২টি মোবাইল ফেরাল হাওড়া সিটি পুলিশ
জানা গিয়েছে, পানীয় জলের সংযোগ হয়ে গিয়েছে।বিদ্যুত সংযোগ হয়েগেছে।শুধু প্যাকেজিং মেশিন নেই বলে উদ্বোধন হচ্ছে না।বহডুর মোয়া ব্যবসায়ী গনেশ দাস বলেন, মেশিন এলেই দ্রুত কাজ শেষ করে উন্নত প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে মোয়া রপ্তানি করা যাবে। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে কিন্তু হাব চালু হচ্ছে না।চাই দ্রুত চালু হোক। জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ী খোকন দাস,রাজেশ দাস, তিলক কয়ালরা বলেন,এই মোয়া হাব দ্রুত চালু হলেআমাদের মতন ব্যবসায়ী দের কাজে লাগতো।মোয়া আরও উন্নততর হতো।তাই দ্রুত এই মোয়া হাব চালু হোক এই আশা রাখছি।
জয়নগর মজিলপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার বলেন, খাদি বোর্ড থেকে আমাদের কাছে জায়গা চাওয়া হয়েছিল।সেই মতো আমরা জায়গা দিয়েছি।ঘর, আলো, জল সবই প্রস্তুত আছে।কিন্তু এখনো কেন চালু করা হলো না সে ব্যাপারে খাদি বোর্ড আমাদের কিছু জানায় নি।জানায়নি কবে তাঁরা চালু করবে।দ্রুত এই জয়নগরের মোয়া হাব তৈরি হলে মোয়া ব্যবসায়ীরা উপকৃত হত।